শ্রেষ্ঠ জিকির - সর্বদা জিকিরের ফজিলত যা সকল মুসলিম মুমিনের জানা উচিত

বেশি বেশি ইস্তেগফার এর ফজিলতশ্রেষ্ঠ জিকির সম্পর্কে জানবেন আজকের আর্টিকেলে। প্রিয় পাঠক, জিকির বা যিক্‌র বা যিকির হচ্ছে আল্লাহর স্বরণ যেটির মাধ্যমে হৃদয়ের প্রশান্তি সহকারে বিপদ-আপদ দূর হয়।
শ্রেষ্ঠ-জিকির
যিকিরের দ্বারা মানুষ এর চিন্তা ভাবনা দূর হয় এবং যিকির অনেক ধরনের হতে পারে। সবসময় জিকির করলে এর আলাদা এবং বৈচিত্রময় ফজিলত রয়েছে যেনগুলো এখানে স্পষ্ট ভাষায় আলোচনা করার চেষ্টা করব।

পেজ সূচীপত্রঃ শ্রেষ্ঠ জিকির সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত বিবরণ জানুন

শ্রেষ্ঠ জিকির 

শ্রেষ্ঠ জিকির সম্পর্কে লিখছি। প্রিয় পাঠক, সর্ব প্রথমে আপনাকে জানতে হবে জিকিরের তথ্য ও তথ্য। জিকিরের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে স্মরণ করা। আর পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে যে কথা বাজে বাক্যের মধ্যে আল্লাহর নাম উল্লেখ রয়েছে সেই বাক্যটা বলা বা উচ্চারণ করাটাই হচ্ছে জিকির। জিকির অনেক ধরনের রয়েছে তবে শ্রেষ্ঠ জিকির কি এই সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে বিভিন্ন কথা উল্লেখ রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ বেশি বেশি ইস্তেগফার এর ফজিলত ব্যাপারটি মানুষের অবিচ্ছেদ্য অংশ

বোখারি ও মুসলিমে একটি হাদিস উল্লেখ রয়েছে যে হাদীসটিতে রাবী বা বর্ণনাকারী রয়েছে হযরত আবু হুরায়রা, যিনি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুলের বাণী হচ্ছে এরকম যে, এখানে শ্রেষ্ঠ জিকির কি সে কথাটাই বর্ণনায় আনার চেষ্টা করছি। তো আল্লাহর নবী বলেন, এমন দুইটি কথা বাক্য রয়েছে যে দুইটি বাক্য উচ্চারণে খুবই হালকা, মিজান বা দাঁড়িপাল্লায় অত্যন্ত ভারী, আর আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'আলার কাছে খুবই প্রিয় বা শ্রেষ্ঠ,

সেই দুইটি শব্দ বা শ্রেষ্ঠ জিকির হচ্ছে "সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম"। একটি বিষয় হচ্ছে সম্মানিত দর্শক শ্রোতা ও পাঠক, যার ভিতরে আল্লাহ তায়ালা স্মরণ থাকবে এবং আল্লাহ যে একজন রয়েছেন কাল কিয়ামতে তার কাছে যথাযথ হিসাব দেওয়া লাগবে এজন্য বেখেয়াল না হয়ে থাকবে তার দ্বারা কোন অন্যায় অবিচার বা পাপকার্য সম্পাদিত হবে না। 

এক্ষেত্রে মিশকাত এবং তিরমিজিতে বর্ণনা রয়েছে যে, বর্ণনাটি বা বিবরণটি হযরতে জাবের থেকে, আল্লাহর রাসূলের বাণীতে রয়েছে যেটি সেটি হচ্ছে যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা হচ্ছে সর্ব উত্তম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির আর আলহামদুলিল্লাহ বলা হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বা সর্ব উত্তম দোয়া। এজন্য আলহামদুলিল্লাহ এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার মাধ্যমে উত্তমতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন হয়ে থাকে। 

এ ব্যাপারটি হাদিসে এভাবেও রয়েছে যে আসমান এবং জমিনের মাঝে যতটুকু ফাঁকা জায়গা রয়েছে এবং তার মধ্যে যত সম্পদ রাজি রয়েছে সবগুলোকে যদি এক পাল্লায় দেওয়া হয় আর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কে যদি আরেক পাল্লায় দেওয়া হয় তাহলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর পাল্লাটাই ভারী হয়ে যাবে। প্রিয় পাঠক বুঝতেই পারছেন জেলা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কত গুনাগুন এবং কত উত্তম এবং শ্রেষ্ঠ জিকির। 

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হচ্ছে এমন বাণী যেটি হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে নিয়ে শেষ নবী, শ্রেষ্ঠ নবী, মহানবী হযরতে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত এই জিকির বা বাক্যটা ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য বা ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই। আর এটি পড়লে বললে দেহ অন্তর থেকে মন সব ঠিকঠাক সুন্দর ও সতেজ হয়ে যায়।

মানুষের অন্তরে খুব ভারি হয়ে যায় এবং মরিচা পড়ে যায় যদি এই অন্তরটিতে আল্লাহর স্মরণ আল্লাহর জিকির ভরপুর বা বিদ্যমান না থাকে। বায়হাকিতে একটি বর্ণনা রয়েছে যে, প্রত্যেকটা জিনিসে যেমন মরিচা পরলে বা জং ধরলে পরিষ্কার করার কিছু যন্ত্র থাকে অনুরূপ অন্তর বা মনের পরিষ্কার এর জন্য যে বিষয়টির রয়েছে সেটি হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠ জিকির। 

একটি হাদিসে রয়েছে যে সর্বশ্রেষ্ঠ বাক্য হচ্ছে চারটি যেগুলো সর্বশ্রেষ্ঠ জিকিরও বটে কারণ সে বাক্য গুলোর মধ্যে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করার জন্য আল্লাহর নাম উল্লেখ রয়েছে। সেই চারটি বাক্য যথাক্রমে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার। তো প্রিয় পাঠক, শ্রেষ্ঠ জিকিরের আপনি যদি সওয়ার বা পূণ্য পেতে চান তাহলে বেশি বেশি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করুন।

সর্বদা জিকিরের ফজিলত 

সর্বদা জিকিরের ফজিলত এ সম্পর্কে বিবরণ দিচ্ছি। জিকিরের অনেক ফজিলত বা শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে যেগুলো এখানে মোটামুটি হলে বর্ণনা করছি। আল কোরআনুল কারীমে ১৬ নম্বর পাড়ায় সূরা তোহার মধ্যে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ হবে, গাফেল থাকবে নিশ্চয়ই তার জীবনটা সংকীর্ণ বিপদজনক হয়ে যাবে। এ বিষয়টি শুধু দুনিয়াতেই নয় আখেরাতের ও জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাবে।

দুনিয়াতে যে কষ্ট হবে সেগুলো হচ্ছে ভালোভাবে রিজিক জুটবে না, সুখ শান্তি মিলবে না পরিবারে, সংসারে সব সময় অভাব অনটন দেখা দিবে। আবার ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনেও এমন কিছু সমস্যা আসবে যেটা অত্যন্ত দুর্বিষহ মুশকিলের। আখেরাতে যে সমস্যা গুলো হবে সেগুলো হচ্ছে আল্লাহর কাছে হিসাব দেওয়া সহজ হবে না। 

জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খ যে একটু হিসাব সেটা খুব কষ্টসাধ্য হবে। হাশরের মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা ও মুসিবতের হবে। আরেকটি আয়তের অংশে যে কথাটি রয়েছে সেটি হচ্ছে যে আল্লাহর জিকির যে করবে না অর্থাৎ আল্লাহ স্মরণ থাকবে না তার ভিতরে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করবে না সে কিয়ামতের দিন অন্ধ হয়ে উঠবে অর্থাৎ তার চোখে আলো থাকবে না দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়ে উঠবে। 

তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে এই জিকিরের কি মর্ম কি ফজিলত কি শ্রেষ্ঠত্ব। জিকির করার মাধ্যমে সংকীর্ণতা বিপদজনক অবস্থা দুনিয়া ও আখেরাতের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুব সহজেই সাধন হয়। বোখারি ও মুসলিম এর একটি বরণে রয়েছে যে বা যারাই যে কোন অবস্থায় আল্লাহ তাআলা কে স্মরণ করবে সেটা বসে হোক শুয়ে হোক আর নীরবে আর উচ্চস্বরে যে কোন অবস্থায় আল্লাহ তায়ালা স্মরণে তার চোখের অশ্রু বা পানি ঝরাবে, 


সর্বদা-জিকিরের-ফজিলত
আল্লাহ ওই ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের কে তার রহমত বা দয়ার মধ্যে বেষ্ঠন দিয়ে রাখবেন বা ঘিরে রাখবেন। যে ব্যাপারটি কুরআন মাজীদেও সুন্দরভাবে আল্লাহ তাআলার স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। আর এটি রয়েছে সূরা আল ইমরানের শেষের দিকে যে, যে বান্দারা আল্লাহ তাআলা কে স্মরণ করবে দাঁড়িয়ে বসে শুয়ে এবং চিন্তা করবে আল্লাহর সৃষ্টির ব্যাপারে। আয়াতের শেষাংশে যেটি রয়েছে সেটি হচ্ছে যে ওই বান্দা বা বান্দাদেরকে আল্লাহ তাআলা জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।

আল্লাহর জিকির

আল্লাহর জিকির নিয়ে আরো যে কথাগুলো বলব সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে, যে আল্লাহ তায়ালার যেকোনো অবস্থায় জিকির বা স্মরণ অন্তরের ভিতর থাকলে, অর্থাৎ দিনে রাতে, সুস্থ অসুস্থ অবস্থায়, হাটা চলাফেরায়, বিপদে-আপদে যেকোনো ক্ষেত্রে আল্লাহতালার জিকির করলে অন্তরের শান্তি ও প্রশান্তি জন্ম লাভ করে। 

এ বিষয়টি আল কোরআনুল হাকিমে এভাবে বলা হয়েছে যে শুনো মুসলমানেরা আল্লাহ তায়ালাকে বেশি বেশি স্মরণ করো তাহলে আল্লাহর এই স্মরণ এর মাধ্যমে অন্তর বা হৃদয়ে প্রশান্তি লাভ করবে। একথাগুলো দুইটি আয়াতের সমন্বয়ে বললাম। ইমাম মুসলিম রা. বর্ণনা করেছেন যে, যেটি আল্লাহর রাসূলের বাণী সেটা হচ্ছে যার বলার মধ্যে থাকবে সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার এই বাক্যগুলো, 

দুনিয়াতে যে বিষয়গুলোর উপরে সূর্যের আলো পড়ে সবগুলো চেয়ে ওই বান্দা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি পছন্দনীয় হয়ে থাকে। রাসুলের আরও বাণী রয়েছে কথা রয়েছে এরকম যে, যে বাণী এবং কথাগুলো একযোগে বোখারী ও মুসলিমে রয়েছে, তো সেগুলো হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর, 

আর এ বাক্যগুলো দিনে ১০০ বার পড়ার ক্ষেত্রে, তার জন্য পর্যায়ক্রমে কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে বা শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে ১০ জন দাস আজাদ করার পুণ্য বা নেকি হয়, আমলনামায় একশত টি নেকি লেখা হয়, আর ১০০ টি গোনাহ মোচন করা হয় বা ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর বিশেষ করে তাকে শয়তানের বিভিন্ন কুমন্ত্রণা জটিলতা বিপদ-আপদ থেকে হেফাজতে রাখা হয়। 

আর এই বিষয়টি হতে থাকবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর বিশেষ করে তার আমলনামায় যে নেকিগুলো হবে সেগুলো শ্রেষ্ঠ এবং উত্তম জিকিরের পূণ্য বা নেকি হবে। তবে তার চেয়ে যে বেশি আমল করেছে তার কথা ভিন্ন। হাদিসের শেষে রয়েছে যে কেউ দৈনিক ১০০ বার সুবহানাল্লাহ বলবে তার সমুদ্রের ফেনা সমপরিমাণ যদি গোনাহ থাকে সেটা মাফ করে দেওয়া হবে।

জিকিরের শব্দ কয়টি?

জিকিরের শব্দ কয়টি বিষয়টি আলোকপাত করছি। প্রিয় পাঠক জিকিরের যে শব্দগুলো রয়েছে সেগুলো অনেক ধরনের। আমরা জেনে এসেছি ইতিপূর্বে যে যে শব্দ বা বাক্যর মধ্যে আল্লাহর নাম উল্লেখ রয়েছে সে বাক্যগুলো উচ্চারণ করাই হচ্ছে জিকির। অথবা শুধু আল্লাহর নাম স্মরণ করা বা আল্লাহকে স্মরণ করা এটা হচ্ছে জিকির। আবার আল কুরআনুল কারীম তেলাওয়াত করা এটা হচ্ছে এক ধরনের জিকির।

যেমন হাদিসে রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম জিকির হচ্ছে আল কুরআনুল মাজীদ আবৃত্তি করা বা তেলাওয়াত করা বা পড়া। আবার সালাত বা নামাজের একটা নাম হচ্ছে জিকির। অর্থাৎ সালাত আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালাকে যতটা বেশি স্মরণ করা যায় অন্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহকে তত বেশি স্মরণ করা যায় না। 

কারণ নামাজের মধ্যে বিভিন্ন দোয়া, সূরা, কেরাত বা তেলাওয়াত এবং জিকির আজকার তাসবি তাহলিল রয়েছে। যেগুলোতে আল্লাহর নাম রয়েছে এবং শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য, রাজিও খুশির জন্য, আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্যই এই নামাজকে আদায় করা হয়। তারমানে বুঝা যাচ্ছে যে নামাজটি একমাত্র আল্লাহকে স্মরণ করতে গিয়েই আদায় করা। 

সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির বা স্মরণ হচ্ছে সালাত বা নামাজ যার মাধ্যমে আল্লাহর এই স্মরণের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন হয়। জিকিরের যে শব্দগুলো একচুয়ালি সেগুলো প্রধানত চারটি যেমন প্রথম তাহলিল বা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, দ্বিতীয় তাসবিহ বা সুবহানাল্লাহ বলা, তৃতীয় তাহমিদ আলহামদুলিল্লাহ বলা, আর চতুর্থ হচ্ছে তাকবীর বা আল্লাহু আকবার বলা। 

এই বাক্যগুলো পর্যায়ক্রমে অর্থ হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই, আল্লাহ হচ্ছেন মহামহিয়ান পুত-পবিত্র ও সকল জড়তা অক্ষমতা থেকে মুক্ত, আর সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য, এবং আল্লাহ হচ্ছেন সবচেয়ে বড় সর্বশ্রেষ্ঠ। আরো বিভিন্ন বাক্য রয়েছে যেগুলো জিকিরের। প্রিয় পাঠক, জিকির করুন আল্লাহকে স্মরণ করুন এবং বিভিন্ন পাপ কাজ থেকে বিরত থাকুন।

জিকির কয় ধরণের?

জিকির কয় ধরণের ব্যাপারটি এখানে আলোচনা করছি। জিকির অনেক ধরনের রয়েছে যে ধরণ গলো কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনার আলোকে উঠে এসেছে। যেমন নয় নম্বর পাড়ায় সূরা আনফালের শেষের দিকে আল্লাহর ঘোষনা রয়েছে যে জিকির করতে হবে মনে মনে, নীরবে, আমার শুধু জিহ্বায় উচ্চারণ হবে কিন্তু শব্দ হবে না, 

আবার সরবে বা উচ্চস্বরে অর্থাৎ জ্বিহবায় ও উচ্চারণ হবে এবং আওয়াজও হবে এইভাবে জিকির করা যাবে। আর এই ব্যাখ্যাটা তাফসীরে মারিফুল কুরআনের মধ্যে রয়েছে। কোরআনের মধ্যে হুবহু যেভাবে রয়েছে সেটি হচ্ছে হে আল্লাহর বান্দারা তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করো বিনয়ে নম্রতার সাথে এবং গোপনে। আর বলা হয়েছে সরবে বা উচ্চস্বরে আল্লাহকে স্মরণ করো বিভিন্ন কথা বা বাক্যের মাধ্যমে। আর এই আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে সকাল বিকেল বা রাত্রি সব সময়। 

আবার মৃত্যুকে স্মরণ করার মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। কারণ যে ব্যক্তি মৃত্যুকে স্মরণ করবে তার দ্বারা কোন অন্যায় বা পাপ সংঘটিত হবে না। ফলে সে আল্লাহকেই স্মরণ করবে এক্ষেত্রে বেশি বেশি দোয়া করবে, কোরআন তেলাওয়াত করবে, নামাজ পড়বে এবং জিকিরের বাক্যগুলো পড়বে। আর এই সবগুলোই হচ্ছে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করা বা আল্লাহর জিকির।

আল্লাহ আল্লাহ জিকিরের দলীল

আল্লাহ আল্লাহ জিকিরের দলীল ব্যাপারটি এখানে সুস্পষ্ট করার চেষ্টা করছি। আল্লাহ আল্লাহ জিকির করা যাবে কি না এ ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। যারা আল্লাহ আল্লাহ জিকির করা যাবে ব্যাপারটিতে মদ পোষণ করছেন তাদের দলিল রয়েছে। তাদের দলিল হচ্ছে ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহ আলাই তার সহীহ মুসলিমে বর্ণিত একটা হাদিস। আর সে হাদীসটি হচ্ছে এরকম যে, লা তাকূমুস সাআতু হাত্তা লা ইউকালু ফিল আরজি আল্লাহ আল্লাহ। 

অর্থাৎ কিয়ামত ততদিন পর্যন্ত হবে না যতদিন আল্লাহ জমিনে আল্লাহ আল্লাহ বলা বান্দা অবশিষ্ট থাকবে। এ কথাটি আবার অন্য জায়গায় এভাবে রয়েছে যার অর্থ হচ্ছে কেয়ামত ততদিন হবে না যতদিন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার মত বান্দা অবশিষ্ট থাকবে। তো বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার বা বিজ্ঞদের মতে আল্লাহ আল্লাহ শুধু জিকির করা যাবে না। 

আল্লাহ আল্লাহ জিকির করলে আল্লাহর সাথে আল্লাহর একটি সেফাতী বা গুনবাচক নাম যুক্ত করতে হবে। যেমন আল্লাহর সাথে বলা আল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ, আল্লাহু কাইয়ুম, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু গাফফার ইত্যাদি এইভাবে বলা। অথবা আল্লাহ শব্দের আগে একটা ইয়া হরফে নেদা যুক্ত করা যেটার অর্থ হচ্ছে যে আল্লাহকে আপনি কিছু বলছেন বা আল্লাহর কাছে কিছু চাচ্ছেন বা আপনি আল্লাহকে ডাকছেন। 

এখানে আরবি ব্যাকরণ অনুপাতে আল্লাহ শব্দের আগে একটা সম্বোধন শব্দ যুক্ত করলে অর্থাৎ ইয়া তারপরের অংশটি উহ্য বা গোপন থাকবে। আর উহ্য বাক্যটির অর্থ হবে আপনি আল্লাহকে বলছেন হে আল্লাহ যেটি প্রকাশ্য, আর গোপন বাক্যটি হচ্ছে আমাকে আপনার অনুগ্রহ দান করুন, আমি আপনার কাছে ফরিয়াদ করছি, আমি আপনার কাছে কিছু চাচ্ছি। এইভাবে বলা যাবে যেটা সৌদি আরবের বড় বড় আলেমগণ বা সৌদি ফতোয়া বোর্ড থেকে আলোচনা রয়েছে।

জিকিরের ফজিলত আব্দুন নূর আইটি

জিকিরের ফজিলত আব্দুন নূর আইটি বিষয়টি আলোকপাত করছি। আব্দুন নূর আইটিতে জিকিরের ফজিলত ব্যাপারটি ইতিমধ্যেই আলোকপাত হয়ে গিয়েছে। এরপরেও এখানে কিছু বলার চেষ্টা করছি। আসলেই আল্লাহকে বিভিন্নভাবে স্মরণ করা যায় যেমন আল্লাহকে মনের ভিতর ধারণ করা, আল্লাহর নাম জপা বা উচ্চারণ করা, সালাত আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা ইত্যাদি। আব্দুন নূর আইটি হচ্ছে এমন একটি আইটি যেটিতে প্রিয় পাঠক আপনি পাবেন কোরআন এবং হাদিসের বিভিন্ন আলোচনা আর এই আলোচনাগুলো দোয়া, জিকির আজকার, তাওবা ইস্তেগফার, কোরআন তেলাওয়াত, আবার সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত এবং কালেমা আরও বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে। 

আবার সাথে সাথে বিভিন্ন ইনকাম বিষয়ক আলোচনা, ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক লেখা, টেকনোলজি বা প্রযুক্তি বিষয়ক পোস্ট, স্বাস্থ্য বিষয়ক ব্লগ এবং আরো নানাবিধ ব্লগ এবং আর্টিকেল নিয়ে লেখা হয়। আপনি চোখ রাখুন আব্দুন নূর আইটিতে ইনশাআল্লাহ আর সুন্দর সুন্দর ব্লগ এবং আর্টিকেল করুন এবং জ্ঞানসমৃদ্ধ করুন। জিকিরের ফজিলত আব্দুন নূর আইটিতে আশা করছি পেয়ে গেছেন। 

যিকির সম্পর্কে কুরআন কি বলছে?

যিকির সম্পর্কে কুরআন কি বলছে ব্যাপারটি এখানে স্পষ্ট করে বলার চেষ্টা করছি। আর কুরআনুল কারীমে জিকির সম্পর্কে বিভিন্ন কথা রয়েছে যেগুলো আমরা মোটামুটি লিখিত ব্লগটির ভিতরে আলোচনা করেছি। এবং আরো কিছু সংযোজন করছি যেগুলো ব্যাখ্যা করে লিখছি। আল্লাহ তায়ালা বলছেন হে জিন ইনসান বা মানব ও দানব তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো। 

আরো পড়ুনঃ নফল রোজার ফজিলত এর যত আলোচনা বিস্তারিত জানুন

অন্যত্রে রয়েছে তোমাদের স্মরণ আমার আমার প্রতি থাকলে আমিও বেশি স্মরণ করব অর্থাৎ বিভিন্ন বিষয় থেকে তোমাকে রক্ষা করব। আর অন্য জায়গায় এই রয়েছে যে হজ্জের সময় বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে যেভাবে আল্লাহ স্মরণ করতে বলেছেন। কারণ এখানে আল্লাহর ঘর রয়েছে এবং হজ্জের কাজগুলো  হচ্ছে মক্কা-মদিনায়। মক্কা মদিনা হচ্ছে পুতপবিত্র জায়গা এখানে বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করলেই আল্লাহকে পাওয়া যাবে। 

অন্য জায়গায় রয়েছে নিজের পিতা-মাতাকে যেভাবে স্মরণ করতে হয় আল্লাহকে তার চাইতে বেশি স্মরণ করতে হবে বা আল্লাহর জিকির করতে হবে। আবার এক জায়গায় রয়েছে সূরা আল ইমরানে হে বান্দা তোমার সকাল বিকাল তোমার প্রতিপালককে অনেক বেশি পরিমাণে স্মরণ করো এবং তার তাসবিহ ঘোষণা কর।

আল্লাহর স্বরণ সর্বশ্রেষ্ঠ

আল্লাহর স্বরণ সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়টি এখানে লিখছি। হ্যাঁ আল্লাহ তাআলা আল কুরানুল কারীমের ২১ নম্বর পারার মধ্যে বলছেন যে আল্লাহর জিকির বা স্মরণ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়। আরবি এবারতটি বাংলায় ওয়ালা জিকরুল্লাহি আকবর, এ কথাটুকু অর্থ হচ্ছে যে নিশ্চয়ই আল্লাহ স্মরণই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই আল্লাহ যেহেতু মহান সর্বশ্রেষ্ঠ তাকে স্মরণ করা হচ্ছে মহানত্ব এবং সর্বশ্রেষ্ঠের কাজ। 

তাই আল্লাহকে সব সময় স্মরণ করতে হবে, দিনে রাত্রে বা দিবানিশি, জেগে এবং পারলে ঘুমিয়েও মানে ঘুমানোর আগে আল্লাহকে স্মরণ করে শুতে হবে, শুয়ে বসে দাঁড়িয়ে যে কোন সময় চলাফেরায় ওঠাবসায় কাজ করতে গিয়ে সবসময় আল্লাহর জিকির আল্লাহ স্মরণ আল্লাহর নাম জপা মনে মনে আল্লাহকে ধারণ করা। 

এবং তওবা ইস্তেগফার করতে থাকতে হবে কারণ তওবা ইস্তেগফার এক ধরনের জিকির যেহেতু তো ভাই ইস্তেগফার যে শব্দগুলো দ্বারা করা হয় সেই শব্দগুলোর মধ্যে আল্লাহর নাম উল্লেখ রয়েছে তাই তাওবা ইস্তেগফার হচ্ছে এক ধরনের জিকির। আবার মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করতে হবে তাহলে এর দাড়াও আল্লাহর বেশি বেশি জিকির হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কারণ যার মধ্যে মৃত্যুর স্মরণ থাকবে তার মধ্যে আল্লাহ স্মরণ থাকবে। 
আল্লাহর-স্বরণ-সর্বশ্রেষ্ঠ
আর আল্লাহর স্মরণ শুধু অন্তরে ধারণ করলেই নয় মুখে উচ্চারণ করতে হবে সেটা নীরবে হোক অথবা সরবে বা এমনভাবে উচ্চারণ করতে হবে যেন পাশের লোক হালকা শুনতে পাই যে আমার পাশের লোক কি যেন গুন গুন করছে এইভাবে। জিকির করতে হবে বিনয় নম্রতার সাথে। আমার জিকির একা একাকী হাত তুলেও করা যায় দোয়া করার মাধ্যমে ইত্যাদি অবস্থায় ও পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে জিকির করতে হবে বা আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে বা আল্লাহর নাম জপতে হবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

শ্রেষ্ঠ জিকির সংশ্লিষ্ট বিষয় সহকারে আলোচনা করেছি উল্লিখিত ব্লগ বা আর্টিকেলটিতে। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি উক্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি অবশ্যই জিকির যে শ্রেষ্ঠ এবং জিকিরের কতগুলো বাক্য রয়েছে জিকির কিভাবে করতে হয় এ সম্পর্কিত বিষয়গুলো স্পষ্ট রূপে বুঝতে পেরেছেন। আরো এরকম নিত্য নতুন ব্লগ বা আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url