খেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো জানুন
ব্যায়াম করার উপকারিতাগুলো দেখে নিনখেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো জানার জন্য যেহেতু এসেছেন তাই আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ুন। খেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক অনেক রয়েছে। তবে নেতিবাচক দিকের চেয়ে ইতিবাচক দিকই বেশি।
খেলাধুলায় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের নানা উপকার সাধন হয়। খেলধুলায় আঘাতের ঝুঁকি রয়েছে যা নেতিবাচক একটি দিক। নিচে আরো কিছু বিষয় বিস্তারিত বলছি।
পেজ সূচীপত্রঃ খেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো জানুনখেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
খেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক বভিন্ন দিক রয়েছে। নিচে একাধারে ইতিবাচক দিক ও নেতিবাচক দিক পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করছি। এক্ষেত্রে, আগে ইতিবাচক ৪টি দিক আলোচনা করব এরপর নেতিবাচক ৪টি দিক আলোচনা করব।
1. শারীরিক সুস্থতা বৃদ্ধি
খেলাধুলার ইতিবাচক দিকের মধ্যে একটি হচ্ছে খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক সুস্থতা বৃদ্ধি পায় এবং ফিটনেস উন্নতি হয়। পাশাপাশি নিয়মিত খেল্লে শারীরিক শক্তি বাড়ে, সহনশীলতা উন্নত হয় এবং শরীরের নমনীয়তা ডেপলপ করে।
পেশী শক্তির উন্নতিঃ খেলাধুলায় দীর্ঘক্ষণ রান বা দৌড়ানোর ফলে শরীরের মাসল বা পেশীগুলো অত্যন্ত মজবুত হয়।
হৃদযন্ত্রে সমস্যা দূর হয়ঃ বিভিন্ন খেলায় রয়েছে হাঁটাহাঁটি এবং লম্ফ-ঝম্প ইত্যাদির ইত্যাদি অ্যাক্টিভিটিজের কারণে হৃদযন্ত্রের রক্ত চলাচল অত্যন্ত সচল যা হৃদরোগ এড়াতে সহায়ক।
2. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি
খেলাধুলার ইতিবাচক দিকের মধ্যে আরো একটি হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধিত হয়। খেলাধুলা মানসিক স্ট্রেস বা চাপ কমায় এবং মেজাজ উন্নত ও ফুরফুরা রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। খেলাধুলায় এন্ডোরফিন হরমোন বের হয় যেটি মনের সজীবতা বৃদ্ধি করে এবং ডিপ্রেশন ও ফ্রাস্ট্রেশন দূর করে।
আরো পড়ুনঃ ব্যায়াম করার উপকারিতাগুলো দেখে নিন
খেলাধলায় হরমোন নির্গমনঃ খেলাধুলায় হ্যাপি হরমোন এন্ডোরফিন রিলিজ হয় এটা ডিপেশন বা হতাশা ও এনজায়টি উদ্বেগ দূরীকরণে যথেষ্ঠ কার্যকরী।
স্ট্রেস হরমোন দূরীভূতঃ খেলাধুলায় স্ট্রেস বা চাপ সৃষ্টির হরমোন দূর হয় ফলে মনের অশান্তি, দঃখ এবং দুর্দশা দূর হয়। যার কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধিত হয়।
3. টিম ওয়ার্ক ও নেতৃত্বের দক্ষতা
খেলাধুলার ইতিবাচক দিকের মধ্যে আরো একটি হচ্ছে টিমওয়ার্ক ও নেতৃত্বের দক্ষতা। এটির মাধ্যমে যেমন লিডারশিপ ও ক্যাপ্টেন্সি বৃদ্ধি করে। আবার সামাজিক মিল-বন্ধন ও যোগাযোগ বাড়াতে প্রচুর সহায়ক ভূমিকা রাখে।
লিডারশিপ বা নেতৃত্বের দক্ষতাঃ খেলাধুলায় একজন করে লিডার বা নেতা থাকে যেটি প্রাত্যহিক জীবনে লিডারশিপ বা ক্যাপ্টেন্সি বা নেতৃত্বের জন্য অনেক বড় ফায়দা তৈরী করে।
টিমওয়ার্ক বা একসাথে কাজ করণঃ খেলাধুলায় যেহেতু অনেক প্লেয়া থাকে সেহেতু সবার সাথে মিলে মিশে খেলতে হয়। যেটি সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে বড় ভুমিকা রাখে।
4. শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা
খেলাধুলার ইতিবাচক দিকের মধ্যে আরো একটি হচ্ছে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা। খেলাধুলা নিয়ম মাফিক রেগুলারটি মেইনটেইন করলে এটি শৃঙ্খলা বাড়ায় পাশাপাশি নিয়মানুবর্তীতার সাথে বাঁচতে শেখায় যা জীবনের চলার পথকে প্রাণবন্ত ও উচ্ছ্বল করে।
শৃঙ্খলাঃ খেলাধলায় বিভিন্ন নিয়মের ভিতর দিয়ে যাওয়ার ফলে নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনে চলা লাগে। তাই খেলাধুলা শৃঙ্খলা শিক্ষার জন্য খুব উপযোগী একটি মাধ্যম।
নিয়মানুবর্তীতাঃ খেলাধুলায় নিয়মের সাথে খেলা এটি খেলা চলাকালীন অথবা খেলার বাহিরে যেখানেই হোক। কারণ খেলাধুলার ভিতরে তো নিয়ম ফলো না করলে হলুদ কার্ড বা লাল কার্ড খেতে হয়।
আর অনেক খেলায় জরিমানা পর্যন্ত দিতে হয় একজন খেলোয়ারকে। আর খেলাধুলার বাইরেও কোচদের কথা মত চলা ও টিমের বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের ভিতর দিয়ে যেতে হয়। এগুলো নিয়মানুবর্তীতা বা ডিসিপ্লেইন শেখায়।
5. আঘাতের ঝুঁকি
খেলাধুলার নেতিবাচক দিকের একটি হচ্ছে আঘাতের ঝুঁকি। খেলাধুলার করার মাধ্যমে শরীরে একাধিক আঘাত ও চোট লেগে শরীর ইনজুরড হতে পারে। বিশেষ করে উচ্চ তীব্রতার খেলাগুলো খুব স্পর্শকাতর হয় যেগুলোতে সতর্ক না থাকলে দেহ বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
খেলায় অনেক সময় পা ভেঙ্গে যায়। অনেক সময় লিগামেন্ট ছিড়ে যায়। হাঁটুতে আঘাত লাগে। হাতের আঙ্গুলে চোট লাগতে পারে। মাথায় আঘাত লাগতে পারে। দাঁত ভেঙ্গে যায় ইত্যাদি আঘাতের ঝুঁকির রয়েছে।
6. মানসিক চাপ
খেলাধুলার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকের আরো একটি হচ্ছে মানসিক চাপ। খেলাধুলায় থাকে প্রচণ্ড পরিমাণ প্রতিযোগিত। এখানে পারফর্ম করার বড্ড যেমন নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছা থাকে। দলের পক্ষ থেকে চাপ থাকে। খেলায় ভালো করতে না পারলে অনেক সময় দল থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
মানসিক স্ট্রেস এর ভিতর দিয়ে যেথে হয়। জয়ী হতে না পারলে দল ও দেশ ও দেশের মানুষের কাছে লজ্জার ভয় থাকা। আবার যে ক্লাবে খেলছে ভালো খেলতে না পারলে ক্লাব থেকে বহিষ্কার এর আশঙ্কা থাকা। খেলাধুলা বিভিন্ন সময় শারীরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণে মানসিক চাপের মধ্যে পড়তে হয়।
7. অতিরিক্ত সময় ও সংস্থান ব্যয়
খেলাধুলার নেতিবাচক দিকের আরো একটি অতিরিক্ত সময় ও সংস্থান ব্যয়। খেলাধুলায় সফল হওয়ার জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয় পরিশ্রম ও প্র্যাক্টিস করার জন্য। আবার অতিরিক্ত সংস্থান বা ব্যবস্থা থাকতে হয়। এগুলোর যথেষ্ঠ প্রয়োজন ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে জীবনের উপর প্রেশার ক্রিয়েট করে।
সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলার করার মাধ্যমে পরিবারকে টাইম দেওয়া যায়না। ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, মা-বাবা এবং আদার আত্মীয়-স্বজনকে সময় দিতে না পারা। যার কারণে অনেক সময় পারিবারিক কলহ-বিবাদ তৈরী হয়।
সময় স্রষ্টার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান একটি জিনিস। তাই আল্লাহ ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআনুল কারীমে স্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছেন সময়ে কসম। আর আল্লাহ যেই জিনিসের শপথ করেন সেটি অত্যন্ত তাৎপর্যবহ ও মহান হয়ে থাকে। তাই সময় ফুরালে সময় জীবনে ফিরে পাওয়া যাবে না। আর খেলাধুলা সময়ের মত মহা মূল্যবান বস্তুটাকে নষ্ট করে। তাই সময়ে ব্যাপারে সচেতন হওয়া সময়ের দাবী।
8. ব্যালেন্সের অভাব
খেলাধুলার নেতিবাচক দিকের আরো একটি ব্যালেন্সের অভাব। খেলাধুলায় অতিরিক্ত মনোযোগ ও সময় ব্যয় না করলে সফল হওয়া যায় না মানে খেলায় জয়ী হওয়া যায় না। এক্ষেত্রে খেলায় অধিক পরিমাণে সময় ব্যয় হওয়ার কারণে সাংসারিক কাজ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রতি ব্যালেন্স বজায় রাখা যায় না। ব্যালেন্সের অভাব বিভিন্ন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে।
জীবনে ব্যলেন্স বা ভারসাম্য বজায় রেখে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এক কাজ করতে গিয়ে আরেক কাজ করা হয়ে উঠেনা যার কারণে অনেক সময় অনেক পস্তানো লাগে। আর তখন পস্তিয়েও লাভ হয় না। কারণ টাইম এ্যান্ড টাইড ওয়েট ফর নোন অর্থা সময় এবং নদীর শ্রোত কখনো ফিরে আসেনা।
আরো পড়ুনঃ শরীরচর্চা ও খেলাধুলার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত জানুন
যেটা গেছে সেটি জীবনে ফিরে পাওয়া যায় না যেমন যৌবন কাল চলে গেলে আর এই সময়গুলো ফিরে পাওয়া আদৌ পসিবল না। পরিবার ও নিজের আপনজনদের সাথে সময় কাটানো হয়ে উঠে না এই খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকলে। তাই সময় বের করে সময় জীবন সুন্দর হবে।
আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url