শরীর চর্চা করার নিয়মগুলো জানুন

শরীরচর্চা ও খেলাধুলার উপকারিতাশরীর চর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে এখানে এসেছেন তাই না? প্রিয় পাঠক, শরীর চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিজের শরীর ও মনের জন্য। শরীর চর্চা যেমন স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখে মনকে ও অনুরুপ সুস্থ রাখে। 

শরীর-চর্চা-করার-নিয়ম

প্রতিটিমানুষের সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত শরীর চর্চা করা একান্ত জরুরী। তাই শরীরচর্চা কি নিয়মে করতে হবে তা না জেনে শরীর চর্চা করলো শরীরের উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়ে যেতে পারে। চলুন শরীর চর্চার নিয়ম নিয়ে নিম্নে আলোচনা করুন।

পেজ সূচীপত্রঃ শরীর চর্চা করার নিয়ম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো জানুন

শরীর চর্চা করার নিয়ম

শরীর চর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে এখানে বলছি। শরীর চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং মানসিক জোর সৃষ্টি করতে। নিজেকে ফিট রাখতে এবং জীবন উপভোগ্য করতে চাইলে শরীর চর্চার মাধ্যমে এটি বজায় রাখতে পারি। শরীর চর্চা কেবল মাংশপেশীর শক্তি বাড়ানোই নয় বরং দৈনন্দিন কার্যক্রমেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি একাধারে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। চলো নিম্নে কিছু হালকা নিয়ম বলি শরীর চর্চা নিয়ে।

ডাক্তার পরামর্শঃ ব্যায়াম করার আগে নিজের শরীরে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে কি না তা নিজের ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নেওয়াটা অত্যন্ত সতর্কতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কারণ শরীর চর্চা করতে গিয়ে শরীর অসুস্থ থাকলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

প্লান তৈরীঃ আপনি শরীর চর্চা দিনে কতবার এবং কতক্ষণ করবেন তা নির্ধারণ করে নেন। ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে ব্যায়াম করুন প্রথম পর্যায়ে। এরপর হালকা থেকে তীব্রতা বাড়ান শরীর চর্চা করার সময়টা। 

আরো পড়ুনঃ শরীরচর্চা ও খেলাধুলার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত জানুন

পোশাক ও জুতাঃ উপযোগী পোশাক ও জুতা পরে নেওয়া উচিত শরীর চর্চা করার পূর্বে। এক্ষেত্রে পোশাক ও জুতা ব্যায়াম এর জন্য যেন আরামদায়ক হয়। তাহলে শরীর চর্চা গিয়ে কোনো উপায়ে শরীর আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ শরীর চর্চার টিপস এ্যান্ড ট্রিকসঃ
  • বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে ব্যায়াম করুন।
  • প্রতিনিয়ত এক রকম ব্যায়াম না করে শরীর চর্চায় বৈচিত্রে রাখুন।
  • লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেলে নিজেকে পূরুষ্কৃত করুন।
  • আর ব্যায়ামের আগে ও পরে বিশেষ করে খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা রাখুন।
  • ফলাফলের জন্য তাড়াহুড়া না করে ধৈর্য ধরুন।
নিম্নে শরীর চর্চা করার নিয়মগুলো বিস্তারিত বলা হলো যেগুলো অত্যন্ত ফলদায়ক ও উপকারী।

ওয়ার্ম-আপ প্রয়োজনীয়তা

শরীর চর্চা করার নিয়ম এর একটি ওয়ার্ম-আপ করা, এর প্রয়োজনীয়তা সীমাহীন। কারণ কেউ শরীর চর্চা করতে গেলে প্রথমে হালকা শরীর গরম না করে ভারী ব্যায়াম করলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ওয়ার্ম মানে গরম করা বা গরম হওয়া। এটি শরীরকে প্রস্তুত করে শরীর চর্চার জন্য। শরীর চর্চার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ওয়ার্ম-আপ দেহের রিস্ক হ্রাস করার মাধ্যম। এটি হ্রদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং পেশীগুলোর তাপমাত্রা আস্তে আস্তে বাড়ায় এবং ব্যায়ামের জন্য উপযোগী করে তুলে।

পেশীগুলির নমনীয়তা বৃদ্ধি করেঃ ওয়ার্মআপ শরীরের পেশীগুলিকে নমনীয়তা বৃদ্ধি করে এবং কর্মক্ষমতা এবং সহ্যক্ষমতা বাড়ায়।

মেন্টাল রেডি করেঃ ওয়ার্ম-আম মেন্টালি ব্যায়ামের রেডি করে এবং শরীর চর্চার প্রতি মনোযোগ ও মনোনিবেশ বাড়াতে সহযোগিতা করে।

ওয়ার্ম-আপ এর জন্য প্রথমে যা করতে হবেঃ ৫-১০ মিনিট হাঁটুন, জগিং করুন, জাম্পিং করুন অথবা হালকা স্ট্রেচিং করুন। প্রতিটি স্ট্রেচ ৩০ সেকেন্ড যাবত করুন। আবার প্রথমে স্বাভাবিক হাঁটুন, এরপর দ্রুত হাঁটুন। এরপর দৌড়ানোর দিকে মনোযোগ দিন।

আর ৫-১০ মিনিট হাঁটুন। ১-২ মিনিট জাম্পিং জ্যাক করুন বা হাই নী করুন। স্ট্রেচিং প্রথমে স্ট্যাটিক করুন এরপর ডায়নামিক করুন। এবং ১-২ মিনিট জাম্পিং রোপ করুন। 

কতক্ষণ ওয়ার্ম-আম করবেন এ বিষয়টি ব্যায়ামের হার্ডনেস এবং সময়কালের উপর ডিপেন্ড করবে। জেনারেলি ৫-১০মিনিট ওয়ার্ম-আপ এনাফ। ঢান্ডা সময় শরীর চর্চা করলে ওয়ার্ম-আপ গরমকালীন সময়ে চেয়ে বেশি লেগে থাকে।

সঠিক টেকনিক

শরীর চর্চায় সঠিক টেকনিক ব্যবহার করতে হবে। সঠিক টেকনিক অনুসরণ করা না হলে প্রত্যাশিত রেজাল্ট পাওয়া দুষ্কর হয়ে যায় এবং ইনজুড়ড হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই জায়গায় সঠিক টেকনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক বর্ণনা করা হলো চলুন জেনে নিই।

সঠিক ফর্ম বজায় রাখাঃ এখানে ফর্ম মানে ভঙ্গি। প্রতিটি ব্যায়াম বা শরীর চর্চার স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র ফর্ম বা ভঙ্গি রয়েছে। নির্দিষ্ট ব্যায়ামের ঠিক ঠিক ফর্ম করেল মাংসপেশী ঠিকভাবে কাজ করে এবং ইনজুর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ফর এক্সামপল, স্কোয়াট ব্যায়াম করার সময় পিঠ স্ট্রেইট রাখতে হয় এবং নী (হাঁটু), ও লেগ (পা) সমান রাখতে হয়।

স্লোলি(ধীরে ধীরে) এবং কন্ট্রোল্ড মুভমেন্ট বা নিয়ন্ত্রিত আন্দোলনঃ প্রত্যেকটা মুভমেন্ট বা নড়াচড়া বা আন্দোলন ধীরে ধীরে করতে হবে, তাড়াহুড়ো বা দ্রুত করা যাবে না। এতে করে জখম হওয়ার পসিবিলিট বেশি থাকে। নিয়ন্ত্রিত মুভমেন্ট মাংশপেশিগুলো পুরোপুরি কাজে লাগে এবং ফিজিকযাল এনার্জি বৃদ্ধি পায়।

সঠিক শ্বাস-প্রশাসঃ শরীর চর্চা করার সময় সঠিকভাবে নিয়মতান্ত্রিকতার সাথে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয়। এক্ষেত্রে, ওজন উত্তোলন করার সময় শ্বাস ছাড়তে হবে এবং নামানোর সময় শ্বাস নিতে হবে। সঠিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার মাধ্যমে মাংসপেশিগুলোর অক্সিজেন সরবরাহ ও কার্যক্রম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

কার্ডিও ব্যায়াম

কার্ডিও ব্যায়াম এটি কার্ডিওভাস্কুলার ব্যায়াম নামেও প্রসিদ্ধ। এই ব্যায়াম হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই ব্যায়ামটি লঙ টাইম ধরে করা হয়ে থাকে এবং এটি শ্বাস-প্রশাসের দীর্ঘায়িতা বৃদ্ধি করে। নিম্নে কার্ডিও ব্যায়ামের ইম্পোর্ট্যান্ট সাইড নিয়ে লিখছি।

হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের ডেভলপমেন্টঃ এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা ডেভলপমেন্ট বাড়ায়। 

ওজন কন্ট্রোলিংঃ কার্ডিও ব্যায়াম ক্যালোরি বার্নিং করতে হেল্প করে এবং ওয়েট কন্ট্রোল করতে অ্যাসিস্ট করে।

স্ট্যামিনা বাড়ায়ঃ স্ট্যামিনা মানে মনোবল বা সহ্য ক্ষমতা বা টিকে থাকার ক্ষমতা। কার্ডিও দেহের স্ট্যামিনা বাড়ায়, পাশাপাশি ধৈর্য বাড়ায়। কাজেই রেগুলার কাজ ও কর্মে শক্তি পাওয়া এবং কাজগুলো করা সহজ হয়ে যায়।

মেন্টাল হেলথ ডেভলপমেন্টঃ কার্ডিও এন্ডোরফিন নামক হরমোন খুব বেশি নির্গত করে এবং মেজাজ উন্নয়ন করে এবং মেন্টাল বা মানসিক স্ট্রেস কমায় দিয়ে মনোস্বাস্থ্য উন্নীত করে।

রোগ প্রতিরোধ পাওয়ার বৃদ্ধি করেঃ প্রত্যহ এবং রেগুলার কার্ডিও করলে রোগ প্রতিরোধ পাওয়ার বৃদ্ধি করে। 

পপুলার বা জনপ্রিয় কিছু কার্ডিও ব্যায়াম এখানে দেওয়া হলো। যেমন রানিং বা দৌড়ানো, সাইক্লিং বা সাইকেল চালানো, সুইমিং বা সাঁতার কাটা, ব্রিস্ক ওয়াকিং বা দ্রুত হাঁটা, এয়ারোবিক্স বা সঙ্গীতের তালে বিভিন্ন মুভমেন্ট ইত্যাদি।

স্ট্রেন্থ ট্রেনিং

শরীর চর্চা করার নিয়ম এর আরো একটি স্ট্রেন্থ ট্রেনিং। এটি রেসিস্ট্যান্স ট্রেনিং বা ওজন প্রশিক্ষণ নামেও পরিচিত। এ রকমের ব্যায়াম মাসল বা মাংসপেশীর শক্তি ও সহ্যশক্তি বাড়ানোতে সহযোগিতা করে। এটি দেহের মাংসপেশীগুলোতে ওজন নিতে এবং প্রতিরোধের প্রায়োগিক মাধ্যম হিসাবে এনার্জি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। নিম্নে স্ট্রেন্থ প্রশিক্ষণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা থাকছে।

  1. মাংসপেশীর বৃদ্ধিঃ স্ট্রেন্থ ট্রেনিং মাংসপেশীর সাইজ বা আকার এবং পাওয়ার বা শক্তি বাড়ায়।
  2. হাড়ের ঘনত্বঃ স্ট্রেন্থ ট্রেনিং হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় যা অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  3. মেটাবলিজম বৃদ্ধিঃ এটি মেটাবলিজম-বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে যেটি মাংসপেশি বাড়াতে সহায়ক।
  4. সমন্বয় এবং ভারসাম্য উন্নয়নঃ স্ট্রেন্থ ট্রেনিং সমন্বয় এবং ভারসাম্য উন্নয়নে সহায়ক যা ইনজুর রিস্ক কমায়।
  5. মানসিক স্বাস্থ্যঃ স্ট্রেন্থ ট্রেনিং মানসিক স্বাস্থ ডেভলপ করে এবং স্ট্রেস চাপ কমায়।

জনপ্রিয় স্ট্রেন্থ ট্রেনিং এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যায়ামের উল্লেখ করছি। বডি ওয়েট এক্সারসাইজ, ওয়েট লিফটিং, রেসিস্ট্যান্স ব্যান্ড এবং মেশিন এক্সারসাইজ ইত্যাদি।

ফ্লেক্সিবিলিটি অনুশীলন

ফ্লেক্সিবিলিটি অনুশীলন হলো নমনীয়তা বাড়ানোর একটি ব্যায়াম। এটি শরীরের জয়েন্ট গতিশীলতা এবং বিভিন্ন মাংসপেশির নমনীয়তা বাড়ায়। ফ্লেক্সিবিলিটি অনুশীলন শারীরিক কার্যকারিতা বাড়ায়, আঘাতের ঝুঁকি কমায় এবং শরীর পুরোপুরি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এখানে ফ্লেক্সিবিলিটি অনুশীলন এর নানা দিক নিয়ে বলা হলো।

  • নমনীয়তা বৃদ্ধিঃ ফ্লেক্সিবিলিটি অনুশীলন দৈনন্দিন কাজকর্মের নমনীয়তা বৃদ্ধি করে।
  • আঘাতের ঝুঁকি কমায়ঃ ফ্লেক্সিবিলিটি বা নমনীয়তা বাড়লে আঘাতের ঝুঁকি কমায়।
  • শারীরিক কার্যকারিতা উন্নতিঃ এটি দেহের একাধিক জয়েন্ট এবং মাসলের কার্যকারিতা উন্নতি করে।
  • রিলাক্সেশনঃ এই প্রকারের ব্যায়াম মেন্টাল ও ফিজিক্যাল চাপ কমিয়ে রিলাক্স দেয়।
  • ব্লাড সার্কুলেশন ইনক্রিজিংঃ এই ধরনের ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা নেয়।

এই ধরনের ব্যায়ামে নাম হচ্ছে স্ট্যাটিক স্ট্রেচিং (হ্যামস্ট্রিং, স্ট্রেচ), ডাইনামিক স্ট্রেচিং(লেগ সুইং, আর্ম সার্কেল), ব্যালিস্টিক স্ট্রেচিং(অ্যাথলেটিক ব্যায়াম), পিএনএফ স্ট্রেচিং(কন্সট্রাকশন, রিলাক্সেশন), ইয়োগা এবং পিলেটস ইত্যাদি।

নিয়মিত রুটিন

নিয়মিত রুটিন ব্যাপারটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগঠিত রুটিন অত্যন্ত জরুরী। কারণ নিয়মিত রুটিন মাংসপেশিগুলিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং ইনজুরের ঝুঁকি কমায়। এখানে নিয়মিত রুটিন তৈরীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোচনা করা হলো।

লক্ষ্য নির্ধারণ যেমন স্বাস্থ্য এর প্রতি যত্নবান হওয়া, ওজন কমানো এবং মাংসপেশী বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব দিন। বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন যেমন কার্ডিওভাস্কুলার এক্সারসাইজ, স্ট্রেন্থ ট্রেনিং, এবং ফ্লেক্সিলিটি ব্যায়াম ইত্যাদি করুন। রুটির সময়সূচী তৈরী করুন যেমন সপ্তাহে ৭ দিন অনুসারে রুটিরন করুন এবং ব্যায়ামের সময় নির্ধারণ করুন। 

ব্যায়ামের মাত্রা এবং টাইম ঠিক করুন যেমন কার্ডিও(২০-৩০ মিনিট), স্ট্রেন্থ (৩০-৪৫ মিনিট) এবং নমনীয়তা এক্সারসাইজের (১৫-২০ মিনিট) প্রতি গুরুত্ব দিন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং পুনরুদ্ধার করুন যেমন প্রতিটি সপ্তাহে ১-২ দিন করুন। উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস করুন এই জন্য পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত পানি খান ইত্যাদির জন্য রুটিন করুন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম

পর্যাপ্ত বিশ্রাম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ শরীর সুস্থ থাকার জন্য। শুধু ব্যায়াম করলেই নয়। এখানে শরীর এর পুনরায় উদ্ধার হওয়ার জন্য একটু সময় ও সুযোগ দেওয়া ভেরি আবশ্যক। এখানে পর্যাপ্ত বিশ্রাম সংক্রান্ত দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো।

মাংশপেশীর পুনরুদ্ধারঃ শরীর চর্চার সময় শরীরের মাংশগুলির ছোট ছোট টিয়ার হয় যেটি রেস্ট বা বিশ্রামের সময় পুনরায় উদ্ধার হয় বা ফিরে আসে।

শক্তি বৃদ্ধিঃ পর্যাপ্ত বিশ্রাম পুনরায় শরীর চর্চার জন্য শরীরে শক্তি ফিরে পাওয়া বৃদ্ধি পায় এবং মাসলগুলো শক্তিশালী হয়।

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ পর্যাপ্ত বিশ্রাম মেন্টাল চাপ কমায় এবং মানসিক হেলথের উন্নতি সাধন করে।

হরমোনের সঠিক ব্যালেন্সঃ পর্যাপ্ত বিশ্রাম এক্ষেত্রে ঘুম এবং শুধু শুয়ে ও বসে থাকা হরমোনের সঠিক ভারসাম্য ঠিক করে ও মাংসপেশি শক্তিশালী করে।

ইমিউন সিস্টেম এর উন্নতিঃ এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  বাড়ায় ইমিউন সিস্টেম উন্নতির কারণে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার কিছু উপায় এখানে রইল। রেস্ট ডে (কম্পক্ষে ১-২ দিন রেস্ট নেওয়া মাস্ট), পর্যাপ্ত ঘুম, পোস্ট-ওয়ার্কআউট কুল-ডাউন(৫-১০ মিনিট শান্ত থাকা, স্ট্রেচিং ইত্যাদি) ইত্যাদি।

পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস

পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস শরীর চর্চা করার নিয়মের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শরীরের নানা পুষ্টি যোগান দেয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল এবং শাক-সবজি খেতে হবে। আরো খেতে হবে বাদাম, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত খাবার এবং রেড মিট বা লাল মাংস ইত্যাদি গ্রহণ করতে হবে শরীর চর্চার ভিতরে।

আরো পড়ুনঃ ব্যায়াম করার উপকারিতাগুলো দেখে নিন

শরীর চর্চায় একাধিক কলা খেতে হবে যেহেতু ব্যায়াম করতে গিয়ে প্রচুর ক্যালোরি ক্ষয় হয়। আর কলা সেটি ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করে। আর খেতে হবে ডাব এটিও পটাসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। আর ব্যায়াম করতে গিয়ে শক্তি কমে গেলে সুগার খেতে হবে যেটি তাৎক্ষণিক শক্তি ফিরিয়ে দিবে শরীরে। এক্ষেত্রে খেতে পারেন খেজুর ইত্যাদি।

হাইড্রেশন গুরুত্ব

হাইড্রেশন এর গুরুত্ব অপরিসীম। হাইড্রেশন মানে শরীরের পানি জনিত সমস্যা। শরীর চর্চা করার কারণে শরীরের ঘাম ঝরে যায়। শরীরে পানি প্রায় ৬০% যেটি কমে গেলে নানা সমস্যা হতে পারে। ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করতে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় আর হাইড্রেশন বা পানি গ্রহণ করলে ফিজিক্যাল টেমপারেচার কমে যায়। জয়েন্টগুলি লুব্রিকেন্ট ময় করে, কোষে পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করে ইত্যাদি।

মোটিভেশন বজায়

মোটিভেশন বজায় রাখা শরীর চর্চা করার নিয়ম এর অন্তর্ভুক্ত। কারণ শরীর চর্চায় যেমন মানসিক চিন্তা-ভাবনা দূর হয়। আবার শরীর চর্চা করার জন্য নিয়মিত মোটিভিটেড না থাকলে শরীর চর্চা করা সম্ভব হয় না। আর এই মোটিভেশনের জন্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী। সমার্ট লক্ষ্যগুলো নিয়মিত পূরণ করুন এবং নিজেকে গিফট করুন। আর সদা সর্বদা ইতিবাচক থট বা চিন্তার ভিতর দিয়ে যান দেখবেন নিজেকে মোটিভেশনে বজায় রাখতে পারবেন।

লেখকের শেষ কথা

শরীর চর্চা করার নিয়ম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে আর্টিকেলটির ভিতরে স্পষ্ট করে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। প্রিয় পাঠক, এ ব্লগ বা আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকলে আমাদের প্রত্যাশা যে অবশ্যই শরীর চর্চা করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। আরো এরকম নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটির প্রতি নিয়মিত চোখ রাখুন ইনশাআল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url