স্থায়ী জাহান্নামে যাওয়ার ১০টি কারণ - জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
ইসলামের দৃষ্টিতে সুদস্থায়ী জাহান্নামে যাওয়ার ১০টি কারণ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি লিখা হয়েছে। প্রিয় পাঠক, জাহান্নাম হচ্ছে পাপীদের শাস্তি আস্বাদনের জায়গা।জাহান্নাম অত্যন্ত ভয়াবহ এবং বিশেষ করে আগুনের শাস্তির স্থানের নাম।
জাহান্নামে যাওয়ার ১০টি কারণ
জাহান্নামে যাওয়ার ১০টি কারণ যেগুলোর এখানে বিবরণ থাকছে। এমন কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো অস্থায়ীভাবে জাহান্নামে যাওয়া লাগে। আমার এমন কিছু কারণ রয়েছে এগুলোর জন্য স্থায়ী বা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে যেতে হয় এবং চিরকাল জাহান্নামেই থাকতে হয়। প্রিয় পাঠক, এখানে যে সমস্ত কারণে জাহান্নামে স্থায়ী বা চিরস্থায়ী ভাবে যাওয়া লাগবে এবং জাহান্নামে অনন্ত অনাদিকাল ধরে থাকতে হবে সে সমস্ত কারণগুলো ১০টি এখানে উল্লেখ করছি।
১. শিরকে আকবার বা বড় শিরকের কারণে জাহান্নামে স্থায়ীভাবে থাকা লাগবে। শিরিক মূলত দুই ধরনের ঃ একটা হচ্ছে শিরকে আকবর বা বড় শিরিক আর একটা হচ্ছে শিরকে আসগার বা ছোট শিরিক। শিরকে আসগার বা ছোট শিরিকের কারণে জাহান্নামে আজীবন থাকা লাগবে না। নির্দিষ্ট শাস্তি ভোগ করা পর্যন্ত জাহান্নামে থাকতে হবে। যেমন রিয়া বা লৌকিকতা বা লোক দেখানো আমল, সুময়া বা লোক দেখানোর জন্য শোনানো। আর বড় শিক এর কারণে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকতে হবে।
যেমন আল্লাহর সাথে শরিক করা এটা তাওহীদে উলূহিয়্যা বা আল্লাহর একক ইবাদতে অন্য কাউকে শিরিক বা অংশীদার স্থাপন করা। আবার তাওহীদে রুবুবিয়্যা বা আল্লাহর একক প্রভুত্বে, পরিচালনায়, রিজিক প্রদান ইত্যাদিতে অন্য কাউকে শরিক করা। আবার আসমা ও সিফাত বা আল্লাহ তাআলার নির্দিষ্ট নাম ও গুণাবলীতে অন্য কাউকে শরিক করা। এগুলো হচ্ছে বড় শিরিক। এই শিরিক করে মারা গেলে জাহান্নামে যেতে হবে এবং চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
কুরআন হাদিসের আলোকে জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত জানুন
শিরকের গুনাহ করে মাফ চাওয়ার যদি সুযোগ থাকে যদি দুনিয়াতেই থাকা অবস্থায় আল্লাহর কাছে তাওবা করা হয় তাহলে আল্লাহ তাআলা নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু ক্ষমা চাইতে হবে দুইটার সময়ের আগে একটা হচ্ছে মৃত্যুর গড়গড়া আওয়াজ হওয়ার আগে, আর আরেকটা হচ্ছে কিয়ামত হয়ে যাওয়ার আগে।
২. বড় কুফরী করা। কুফরি মূলত দুই ধরনের ঃ একটা ছোট কুফরি আর একটা হচ্ছে বড় কুফরি। ছোট কুফরি এ ধরনের কুফরিকে আমলের কুফরি ও বলা হয়। যেমন আল্লাহর নিয়ামতের কুফরি করা, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করা এবং এক মুসলমান অন্য মুসলমানের সাথে যুদ্ধ করা। আর বুযড় কুফরি হচ্ছে যেটা আকিকা বা বিশ্বাসে কুফরি।
যেমন আল্লাহকে অস্বীকার করা, অহংকার করে আল্লাহ তায়ালার বিধানকে না মানা, আল্লাহর বিধান এর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করা ইত্যাদি এগুলো হচ্ছে বড় কুফরি। এই বড় কুফরি করার কারণে মানুষকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকতে হবে কোনদিন সে জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবেন না। তবে ছোট কুফরির কারণে জাহান্নাম থেকে সমপরিমাণ শাস্তি ভোগ করার পর এক সময় বের হতে পারবে।
৩. ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের যেকোনো একটি কে না মানা বা অস্বীকার করা। পাঁচটি স্তম্ভ হচ্ছে যথাক্রমে শাহাদাত বা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের প্রতি ঈমান আনযন করা। সালাত বা নামাজ, সিয়াম বা রোজা, হজ্জ এবং যাকাত। তবে নামাজের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে যে নামাজ অস্বীকার করলে তো কাফের হবেই হবে কিন্তু নামাজ ছেড়ে দিলেও অলসতা বসত না পড়লে ও মানুষ কাফের হয়ে যায়।
এইজন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ব্যাপারে আমাদের যত্নশীল হতে হবে নামাজ কোনো কমই ছাড়া যাবে না। অলসতা করে হোক অথবা যেকোনো কারণেই হোক নামাজ ছাড়া যাবে না হুশ থাকা পর্যন্ত নামাজ পড়তেই হবে। তাহলে আমাদের মুক্তি মিলবে না সেটা আমাদের জন্য ধ্বংস অনিবার্য।
৪. আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল কিংবা আল্লাহর রাসূলের কোন বিধান নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা। কত মানুষ আল্লাহকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে, আল্লাহ রাসূলকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে, আল্লাহ আল্লাহর রাসূলের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলো নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে। আবার আল্লাহর বিভিন্ন বিধান রয়েছে যে বিধানগুলো নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে। যে যেভাবে ঠাট্টা বিদ্রুপ করুক না কেন ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত বিষয় নিয়ে সে কাফের হয়ে যায়। ঈমান আনায়ন করার পরে, বা ঈমান অবস্থায় যেকোনো আল্লাহর হুকুম আকাম নিয়ে হাসি তামাশা ঠাট্টা বিদ্রুপ জোকস করলে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যায় এবং কাফেরে পরিণত হয়।
৫. আল্লাহ বা আল্লাহর রাসূলকে নিয়ে কিংবা আল্লাহর রাসূলের কোন বিধান নিয়ে গালমন্দ করা। যেমন এ বলা যে আল্লাহর কি চোখ নেই সে দেখতে পায় না যে আমার এখন কি অবস্থা। আল্লাহ কি শুধু আমাকেই দেখতে পাই আর কাউকে দেখতে পাই না। অথবা এ বলা আল্লাহ আমার সাথে জুলুম করেছে অর্থাৎ আল্লাহকে জালেম বলা হলো, জালেম একটা গালি। আল্লাহকে বিভিন্নভাবে গালি দেওয়া হয়।
আল্লাহর রাসূলকে বিভিন্নভাবে গালি দেওয়া হয় যেমন নাস্তিকরা নারী লোভী বলে। কথাটা মুখে আনতেই খারাপ লাগতেছে তারপরেও বুঝানোর জন্য বলতেছি যে হযরতে আয়েশাকে নাকি আল্লাহর রাসুল ধর্ষণ করেছে। আমার হযরত আয়েশাকে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে গালি দেওয়া হয়। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার ব্যাপারে সব কোরআন মাজীদে তার পবিত্রতাকে লক্ষ্য করে বারটি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।
৬. মানব রচিত আইন দ্বারা বিচার ফয়সালা করা। আবার এও বলা যে আল্লাহর আইন মধ্যযুগীয় আইন এই সময়ে এ আইনের কোন দাম নেই বা এ আইন উপযুক্ত নয়। অনেক সময় আল্লাহর আইনকে নাদান রা মূর্খরা না বুঝে বর্তমান জামানার সাথে উপযোগী নয় বলে আখ্যা দেয়। আমার অনেক সময় বলে যে আল্লাহর আইন ও ঠিক আছে আর আমরা মানুষদের আইন ও ঠিক আছে।
যেকোনো একটাতে বিচার করলেই হইছে। এটা সম্পূর্ণ বোকামি এবং মূর্খতা বৈ কিছুই নাই। আল্লাহ আইন সব মানুষের জন্য সব সময়ের জন্য এবং সর্বযুগের জন্য সবসময়ই আধুনিক। আল্লাহর আইন কে সেকেলে বা পুরাতন বা অনেক আগের বললে যেটি বর্তমান যুগের সাথে খাপ খাবে না এটা মনে করা কুফরি এবং যে এ রকমটা মনে করে সে কাফেরে পরিণত হয়। কারণ সে মানুষের আইনকে আল্লাহর আইনের চেয়ে উত্তম মনে করে এবং প্রাধান্য দেয়। অতএব চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে।
৭. বড় মুনাফিকি বা আকিদা বিশ্বাসের মোনাফিকি মানুষকে কাফেরে পরিণত করে। ছোট মোনাফেকি বা আমলে মুনাফিকির মানুষ ফাসেক বা পাপী বা পাপাচারি হয়। আর এই বড় মোনাফিকির কারণে ইসলামের অনেক ক্ষতি হয় যেটা একজন সাধারণ কাফেরের দ্বারা ক্ষতি হয় না। সাধারণ কাফেরের দ্বারাও ক্ষতি হয় তবে বড় মোনাফেকের চাইতে কম হয়।। বড় মোনাফেক বা আকিদা বিশ্বাসে মুনাফিক ইসলাম এবং মুসলিমের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তার মনে এক থাকে আর বাইরে আর এক থাকে। সে বাইরে দেখায় যে ইসলামের জন্য সে খুব উপকার করছে কিন্তু ভিতরে ইসলামের জন্য বিষ হিসেবে কাজ করছে। আর তাই সে চিরস্থায়ী ভাবে জাহান্নামে যাবে।
৮. যারা মনে করে দুনিয়াতে এমন কিছু বলি আউলিয়া রয়েছে আর তারা এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে তাদের আর নামাজ রোজা ইত্যাদি লাগে না। অর্থাৎ তারা ফানা ফিল্লাহ বা আল্লাহর মধ্যে বিলীন হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ তাদেরকে আল্লাহর একটা অংশ বানিয়ে দেয়, আল্লাহর শরীক বানিয়ে দেয় তাই তারা মুশফিক কাফের। আর এটা ইংলিশি যুক্তি, একটা খোড়া যুক্তি। আর বলে যে যুক্তিতে মুক্তি মিলে। এই ধরনের যারা যুক্তি দিয়ে ওলি-আওলিয়াদেরকে আল্লাহর আসনে বসিয়ে দেয় এবং বিশ্বাস করে যে তাদের আর নামাজ রোজা এবং অন্যান্য ইবাদতের দরকার নাই যারা কাফেরে পরিণত হয়। তারা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নাম অবস্থান করবে।
৯. এমন কিছু লোক রয়েছে যারা দিন থেকে বিমুখ থাকে। দিনের শিক্ষা করে না, দিন শিখে না এবং এটা নিয়ে চর্চা করে না সম্পূর্ণরূপে দিন থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে। কিভাবে নামাজ পড়তে হয় তাও জানো না আর রোজা করতে হয় তাও জানো না। জীবনের কোনদিন একটা সিজদা দিয়েও দেখেনি সিজদা কিভাবে দিতে হয় সেটাও জানে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তো পড়ে না, জুমার নামাজ এমনকি ঈদের নামাজ পর্যন্ত পড়ে না এমনও লোক রয়েছে। আজ নেটের জগতে বর্তমান বিশ্বে ইসলাম আফ্রিকার জঙ্গল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে।
তাই আল্লাহর সামনে যুক্তি বা ওযর পেশ করার কোন সুযোগ থাকবে না যে আল্লাহ আমার কাছে ইসলাম পৌঁছেনি বা আমি ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানি না। অতএব সাবধান ইসলামের বিধি-নিশেদ সম্পর্কে জেনে আমল করুন। অন্যথায় জাহান্নামের চিরস্থায়ী অবস্থান করতে হবে। যারা এমনটা করবে তারা জাহান্নামে অনাদিকাল ধরে জীবন যাপন করবে। আর এই জাহান্নাম অত্যন্ত কষ্টের জায়গা যেখানে সুখের কোন স্পর্শ নেই ছায়া নেই ছোঁয়া নেই কিছুই নেই।
১০. কোরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা যাদেরকে জান্নাতের সার্টিফিকেট দিয়েছেন, যাদের সম্পর্কে কথা বলেছেন যে এরা হচ্ছে জান্নাতি, যারা দুনিয়াতে থাকতেই জান্নাতের শুভ সংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী তাদেরকে জান্নাতি বলে মানে না স্বীকার করে না অস্বীকার করে, অবজ্ঞা করে অবহেলা করে এবং বিভিন্নভাবে কটুক্তি করে। আবার যারা বাদরী সাহাবী যাদের ব্যাপারে কোরআন বলেছে যে তোমরা যা ইচ্ছা তাই কর আজকে পর থেকে তোমাদেরকে আল্লাহতালা ক্ষমা করে দিয়েছেন,
তো তাদের ব্যাপারেও অনেক নাস্তিক বা আল্লাহতে অবিশ্বাসী অস্বীকার করে, অপমানজনক কথা বলে, অবমাননা করে আর তারাও চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে। সাহাবীদের ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন যে তাদের প্রতি আল্লাহ নিজে সন্তুষ্ট এবং সাহাবীরাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট, আর এই সাহাবীদেরকে নিয়ে অনেকেই অনেক হীন কথা বলে যেটা সাহাবীদের শানে সম্পূর্ণরূপে খেলাফ।
সম্মানিত পাঠকগণ কে বলতে চাচ্ছি যে আপনি বা আপনারা জাহান্নামে যাওয়ার ১০টি কারণ ভালোভাবে পড়ুন এবং আয়ত্ত রাখুন। কারণ জাহান্নাম অত্যন্ত দুর্ভোগ এবং কষ্টের জায়গা যেখানে স্থায়ী কেন অস্থায়ীভাবে ও যাওয়ার মন মানসিকতা রাখা বা করা যাবে না। কেউ যদি বলে যে নামাজও পড়বো সাথে সাথে অন্যান্য পাপ কাজের সাথে জড়িত থাকব,
কারণ নামাজ পড়লেই ঈমান থাকে, আর ঈমান যার থাকবে তাকে এক সময় আল্লাহ তায়ালা জাহান্নাম থেকে জান্নাতি তো দিবেন। এটা মনে করা সম্পূর্ণরূপে বোকামি ছাড়া কিছুই নয় কারণ জাহান্নামের আগুন বড় ভয়াবহ অন্তর স্পর্শ করে। তাই বিষয়গুলো পড়ে আমল করার চেষ্টা করুন।
জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিভিন্ন কথা কোরআন এবং হাদিসে রয়েছে যার সংক্ষেপে এখানে আলোচনা কর। জাহান্নাম অত্যন্ত ভয়াবহ এক জায়গা সেখানে তার বাস্তব চিত্রটা দেখে কেউ যাইতে চাইবে না। কিন্তু বর্তমান দুনিয়ার লোকদেরকে দেখলে মনে হয় জাহান্নাম সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে গাফেল বা উদাসীন। এত চারিদিকে ওয়াজ নসিহত, জলসা মাহফিল তাফসির সম্মেলন ইত্যাদি হচ্ছে এরপরেও মানুষ সতর্ক এবং সজাগ হচ্ছে না। মানুষ বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করছে মনে হয় মরতে হবে না, একদিন হিসাব-নিকাশ হবে না।
যাই হোক জাহান্নাম থেকে বাঁচতে চাইলে জাহান্নামিদের বৈশিষ্ট্য গুলো দেখে বুঝতে হবে এবং বেঁচে থাকতে হবে। জাহান্নামের বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করছি।
- আল্লাহর ভয় অন্তরে না থাকা। ফলে ইসলামের বিধি নিষেধ গুলো মানে না।
- সর্বদা মিথ্যা কথা বলে, মিথ্যার সাথেই থাকে, মিথ্যা রটনা করে।
- অহংকার বসত চলাফেরা করে, তাই নিজেকে দিন-ধর্মের কাজ করা থেকে বিমুখ রাখে।
- অসৎ উপায়ে উপার্জন করে, মানে হারাম খায়, হারাম ভাবে ইনকাম করে এবং হারাম উপায়ে শরীর গঠন করে।
- নামাজ না পড়া, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কোন মন মানসিকতাই নেই। যেটি ঈমান ও ও কুফরের পার্থক্য।
- দুনিয়া ছেলে-মেয়ে সন্তান-সন্ততি নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকা। মানে আল্লাহর কোন স্মরণ অন্তরে না থাকেনা।
- সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ করে না। অথচ হজ্জ তার ওপরে ফরজ হয়ে গিয়েছে।
- নেসাব পরিমাণ সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও সম্পদের যাকাত বের না করা। যেটা সে গচ্ছিত রাখে আর এ গচ্ছিত সম্পদ টা পরকালের সাপ হয়ে যাবে।
- ফরজ রোজা আদায় না করা। আর যারা আদায় করে তাদেরকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হেয় করা।
- পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ে তাঁদের সাথে বিভিন্ন সময় খারাপ আচরণ করা যাদেরকে উহ শব্দ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
- ফকির মিসকিন কে খাবার না দেওয়া এবং ঘরের ফকির মিসকিন আসলে তাদেরকে প্রকারান্তরে অপমানিত করা।
- সব সময় খেলতাম আশা হাসি রহস্য এবং আড্ডাবাজিতে ব্যস্ত থাকা, মত্ত থাকা।
- জুয়া খেলা, সুদ ঘুষ খাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো জাহান্নামে যাওয়ার কারণ এবং প্রকারান্তরে জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য।
জাহান্নাম কয়টি?
দুনিয়াতে যেমন বিভিন্ন ধরনের লোক রয়েছে, বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার লোক রয়েছে, একেক লোক একেক রকম পাপ বা অন্যায় করে থাকে। এজন্য পাপ অনুসারে শাস্তির পরিমাণও কম বেশি হবে। কাউকে শুধু আগুনের জুতা দিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে। কাউকে রক্তের নহরে ডুবিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে। কাউকে হাতুড়ি দিয়ে পিটে পিটে শাস্তি দেওয়া হবে। তবে সব শাস্তির মূলে থাকবে আগুন। মানে আগুনটাই হবে শাস্তির মাঝে সবচেয়ে ভয়ংকর এবং কষ্টদায়ক শাস্তি।
জাহান্নাম মানে ই আগুনের জায়গা। জাহান্নামে যাবে আর আগুন এর শাস্তি আস্বাদন করবে না এ হবে না। আর এই জন্য জাহান্নামের স্তর রয়েছে। যে স্তরগুলোর এক একটাতে এক এক শ্রেণীর জাহান্নামে থাকবে। আর সেই স্তরগুলো কয়টি এই ব্যাপারটি আল কুরআনুল কারীমে বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে কারীমে জাহান্নামের সাতটি স্তর বর্ণিত হয়েছে। যার প্রথমটি হচ্ছে স্বয়ং জাহান্নাম শব্দটি। আর এই জাহান্নাম শব্দটি কোরআন মাজীদে ৭৭ বার এসেছে।
আল্লাহ বলছেন জাহান্নাম সম্পর্কে জাহান্নামীদেরকে যে তোমরা জাহান্নামে প্রবেশ কর আর তা কতই না নিকৃষ্ট স্থান। দ্বিতীয় হচ্ছে লাযা, লাযা জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন এটি হচ্ছে লাযা বা লেলিহান। আর তা হচ্ছে চামড়াকে ঝলসে দিবে। তৃতীয় হচ্ছে হুত্বামাহ, আর এই সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন যারা মাল জমা করে রাখে তাদেরকে হুতামাহ বা চূর্ণ-বিচূর্ণকারী জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। চতুর্থ হচ্ছে সাঈর,
এই জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন যে নিশ্চয় শয়তান তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু, তোমরা তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ করো, কেননা সে তো তার সাথী সহ চরবৃন্দ বা সদল বল কে নিয়েই সাঈর নামক জাহান্নামের অধিবাসী হবে। পঞ্চম হচ্ছে সাকার, সাকার জাহান্নাম সম্পর্কে বলছেন যে সেদিন জাহান্নামিদেরকে মুখের ভরে সাকার নামক জাহান্নামে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে আর বলা হবে যে তোমরা সাকারের স্বাদ আস্বাদন কর। ষষ্ঠ হচ্ছে জাহিম,
আর এই জাহিম নামক জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ বলেন যে যারা আল্লাহর বিধি বিধানকে অস্বীকার করে এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তারা জাহীম নামক জাহান্নামের অধিবাসী হবে। আর সপ্তম হচ্ছে হাবিয়া, আর এই হাবিয়া নামক জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ বলেন যে, যে বান্দার পাপের পাল্লা ভারী হবে সে হাবিয়া নামক জাহান্নামে থাকবে। প্রিয় পাঠক, জাহান্নাম গুলোর নাম জেনে জাহান্নামে যেন যেতে না হয় এজন্য নেক আমল করুন এবং ঈমান ঠিক রাখুন। আল্লাহ সে তৌফিক দান করুন।
কারা বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাবে?
যারা বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাবে এ বিষয়টি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে এমন অসংখ্য কোরআনের আয়াত ও নবীজির হাদিস রয়েছে। কিন্তু বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাবে এরকম বর্ণনা খুব কম রয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে একটা হাদিস শোনা যায় যে ৬ শ্রেণীর লোক বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাবে। আর হাদীসটি হচ্ছে ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক তার কিতাব এহইয়াউ উলূমিদ্দীন মধ্যে বর্ণিত হয়েছে।
আর এই হাদিসটির ব্যাপারে হাদিসের যারা সহি জয়ীফ নির্ণয় করেন বা উসূল হাদিস এক্সপার্ট তারা হাদিসটিকে জয়ীফ বা দুর্বল বলে আখ্যা দিয়েছেন, এই হাদিসটি সহি নয়। হাদীসটি হচ্ছে এরকম যে ৬ শ্রেণীর লোক বিনা হিসাবে জাহান্নামে যাবে। ১. যালেম শাসক ২. জাত অভিমানী আরব ৩. যে নেতা অহংকার করে ৪. যে ব্যবসায়ী খেয়ানত করে ৫. যে বস্তির লোক জাহেল ৬. এবং যে আলেম হিংসুটে বা হিংসুক।
কবিরা গুনাহগার কি চিরকাল জাহান্নামে থাকবে?
কবিরা গুনাগার কি চিরকাল জাহান্নামে যাবে বিষয়টি স্পষ্ট করছি। অনেক মুসলমানই জানে না যে কবিরা গুনাহ বা বড় গুনাহের কারণে সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে নাকি অস্থায়ীভাবে থেকে এক সময় আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দিবেন। ওলামা একরাম এ ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একদল লোক মনে করে যে কবিরা গুনাহ করলে সে জাহান্নামে যাবে এবং জাহান্নামে চিরকাল চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। এটা আদৌ ঠিক নয়।
এটা সালাফে সালেহীন এর আকিদা বা বিশ্বাস নয়। এটা হচ্ছে ভ্রান্ত আকিদা, খারিজিদের আকিদা। খারিজিরা মনে করে যে কবিরা বা বড় গুনাহ করলে চিরস্থায়ী ভাবে জাহান্নামে থাকতে হবে। যেটা সঠিক আকিদা সেটা হচ্ছে যে কবিরা বা বড় গুনাহ করলে ক্ষণস্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে জাহান্নামে যাবে যদি সে তাওবা করে মারা না যায়। আর তাওবা করে মারা গেলে এবং আল্লাহ তায়ালা তার তওবা কবুল করলে অবশ্যই সে জান্নাতে যাবে।
এক্ষেত্রে একটা দলিল হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা রয়েছে যে যে নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা শিরিকের গুনাহ ছাড়া সব গুনাহ মাফ করে দিবেন। অর্থাৎ শির্কের গুনাহ করে কেউ যদি মারা যায় তাহলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে। এছাড়া অন্য কোন বড় গুনা বা কাবিরা গুনাহ করে মারা গেলে সে আল্লার ইচ্ছায় থাকবে। আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে তাকে মাফ করে বিনা হিসাবে জান্নাতে দিতে পারেন আবার ইচ্ছা করলে জাহান্নামে রাখতে পারেন।
তবে জাহান্নামে তার বড় গুনাহের পরিমাণ শাস্তি ভোগ করার পরে একসময় সে জান্নাতে যাবে। তবে দুনিয়াতে থাকতেই কেউ যদি শিরকের গুনাহ সহ কুফরি নেফাকি যেকোনো আকিদাগত আমল গত গুনাহ থেকে যদি তাওবা করে তো অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা মাফ করবেন। কিন্তু তাওবা না করে মারা গেলে শিরিকের গুনাহ ছাড়া চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকা লাগবে না। বাকিটা আল্লাহতালা ভালো জানেন।
জাহান্নামে কারা চিরকাল থাকবে
জাহান্নামের যারা চিরকাল থাকবে বিষয়টি ইতিমধ্যেই প্রথমেই আলোচনা করেছি। এরপরও আরো একবার সংক্ষেপে এখানে আলোকপাত করছি। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি চিরকাল জাহান্নামে থাকতে না চান তাহলে এই বিষয়টি আপনাকে স্পষ্ট জানতে হবে এবং মনে রাখতে হবে। কারণ জাহান্নাম সংক্রান্ত বিষয় খুবই সেনসিটিভ বা স্পর্শকাতর। তো চলুন জেনে নিন।
- বড় শিরিক করা
- বড় কুফরি করা
- ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের যেকোনো একটিকে না মানতে চাওয়া বা অস্বীকার করা।
- আল্লাহ বা আল্লাহর রাসূল এবং আল্লাহর দ্বীনকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা
- আল্লাহ বা আল্লাহর রাসূল কিংবা আল্লাহর দ্বীনকে নিয়ে গালমন্দ করা
- আল্লাহর বিধান ছাড়া মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার ফায়সালা করা
- বড় মুনাফিকি বা আকিদা বিশ্বাসের মুনাফিকি বা কপটতা
- যারা মনে করে যে আল্লাহর কিছু অলি-আওলিয়া আছে যারা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যেখানে পৌঁছে গেলে আর নামাজ রোজা কিছুই লাগে না এই বিশ্বাস করা
- আল্লাহর দ্বীন থেকে বিমুখ থেকে ইসলামের হুকুম আকাম না শিখা
- কুরআনে বর্ণিত জান্নাতি সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ব্যক্তিদের অস্বীকার করা বা মানতে না চাওয়া।
সাকার জাহান্নামে কারা যাবে
সাকার জাহান্নামে যারা যাবে বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করছি। জাহান্নাম যেটাই হোক যে কোনো জাহান্নামে যাওয়ার জন্য মনঃস্থ বা মন মানসিকতা করা যাবে না। সব সময় জাহান্নাম থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। দোয়া করতে হবে যে আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও, আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। এমন একটি হাদিস রয়েছে যে সকাল এবং সন্ধ্যায় জাহান্নাম থেকে সাতবার পানাহ চাইতে হবে।
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক যে সাকার নামক জাহান্নামে কারা বিষয়টি। আল কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াত রয়েছে যার মধ্য থেকে পরস্পর কয়েকটি আয়াতের মর্মার্থ বলার চেষ্টা করছি। যে আয়াতগুলো কুরআন মজিদের ২৯ নম্বর পারার সূরা মুদ্দাসসির এর ভিতর রয়েছে। আল্লাহ বলবেন সাকার নামক জাহান্নামিদের কে যে তোমরা এখানে কেন?
তখন তারা বলবে যে আমরা দুনিয়াতে থাকতে সালাত আদায় করতাম না, মিসকিন বা অসহায়দের খাবার দিতাম না। আমরা সর্বদাই বাজে আলাপে লিপ্ত থাকতাম, খেল তামাশা হাসি রহস্য করতাম। আর শেষে বলবে যে আমরা আজকের দিনে যে হিসাব হবে অর্থাৎ হাশরের মাঠে আল্লাহর সামনে হিসাব দিতে হবে যে ব্যাপারটি অস্বীকার করতাম বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতাম।
অত্র আয়াতের মর্মার্থ থেকে বোঝা গেল যে সাকার নামক জাহান্নামে চার শ্রেণীর লোক যাবে বেনামাজী, মিসকিন বা অসহায় দুস্থ লোকদের খাবার দেয়না এমন লোক, সর্বদা দুনিয়া দিয়া আড্ডাবাজিতে মত্ত এমন লোক এবং কিয়ামতের মাঠে হিসাব দিতে হবে এমন দিনের অস্বীকারকারী।
জাহান্নামের আজাব
জাহান্নামের আজাব বা শাস্তি কেমন হবে আমরা ওয়াজ মাহফিলে শুনে থাকি এবং জুমার দিনে খতিবদের কাছ থেকে শুনে থাকি। এখানে সারসংক্ষে জাহান্নামের আজাব বা শাস্তি সম্পর্কে বলছি। জাহান্নাম নাম নাম শুনলেই আমাদের ব্রেনে বা মস্তিষ্কে এ কথা চলে আসে যে জাহান্নাম হচ্ছে আগুনের শাস্তির জায়গা। এখানে শুধু আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে না শাস্তি দেওয়া হবে অত্যন্ত শাস্তিদায়ক ঠান্ডা বরফ দিয়ে।
আরো পড়ুনঃ
নফল রোজার ফজিলত এর যত আলোচনা বিস্তারিত জানুন
আবার জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে কাটাযুক্ত ঘাস বা খাবার দ্বারা যে খাবার গলাতে আটকে যাবে নিচেও যাবে না উপরেও আসবেনা। তখন অত্যন্ত গরম ফুটন্ত পানি দেওয়া হবে যে পানি পেটের নাড়িভুড়িকে পিছন দার বা গুহ্য দেশ দিয়ে বের করে দিবে। আবার চামড়া গুলি কি ঝলসে দেওয়া হবে পুনরায় আবার নতুন চামড়া গজিয়ে দেওয়া হবে নতুন শাস্তি আস্বাদনের জন্য। আবার জাহান্নামের শাস্তি হিসেবে থাকবে পচা দুর্গন্ধময় জাহান্নামিদের রক্ত পুঁজ দিয়ে যেটা তাদের পিপাসা লাগলে চাইলে দেওয়া হবে।
আবার জাহান্নামের শাস্তির জন্য থাকবে সাপ-বিচ্ছু। জাহান্নামে জাহান্নামিদের কে শাস্তির জন্য তাদের দেহকে বিশালাকার করে দেয়া হবে যেন শাস্তির মাত্রা দ্বিগুণ বহুগুণ আস্বাদন করতে পারে। জাহান্নামের আজাব ব্যাপারটি শুনলেই গা শিউরে উঠে। আর একজন মোমিন মুসলিমের এমনটি হওয়া উচিত। তাই প্রিয় পাঠক জাহান্নামের আজাব বা শাস্তি থেকে বাঁচতে চাইলে আল্লাহ, আল্লাহর রাসূলের বিধানগুলো ফলো করুন, মানুন এবং জীবনে বাস্তবায়ন করুন।
জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা কেন বেশি হবে
জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা কেন বেশি বিষয়টি এখানে সুস্পষ্ট করার চেষ্টা করছি। যখন আল্লাহর রাসূল মেরাজে গেলেন, মেরাজের রাত্রিতে আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম জিব্রাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে উর্ধা আকাশে গমন করেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি জাহান্নামে উঁকি মেরে দেখছিলেন যে জাহান্নামে অধিকাংশই নারী। পুরুষের সংখ্যা কম এবং নারীর সংখ্যায় বেশি।
ব্যাপারটি নবীজি সাহাবীদের সামনে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন এইভাবে যে যে নারীরা কেন বেশি জাহান্নামে যাবে, তিনি বললেন যে নারীরা অধিকাংশ সময় তাদের স্বামীদের কুফরী করে বা অকৃতজ্ঞ হয়। স্বামীদেরকে বলে যে তুমি আমাকে এটা দাও নিয়ে ওটা দাও নি, বা এভাবে বলে যে আমার বাড়িতে যা আছে সবই আমার বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছি। প্রকারান্তরে স্বামীকে বাবা বলা হয়ে যায় যেহেতু স্বামীর দেওয়া জিনিসগুলোকে বাবার বলা হয়।
আরেকটি বিষয় যেটি আল্লাহ রাসূল বললেন সেটি হচ্ছে যে নারীরা বেশিরভাগ সময় লা'নত করে বা অভিসম্পদ করে। একটুতেই বাচ্চাকাচ্চাদের বলে, তুই মরতে পারিস না। আবার বলে যে আমার মরণ হচ্ছে না কেন? আবার এও বলে অন্য মানুষের ভালো দেখে যে কেন তার ভালো হচ্ছে সেগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে না কেন? অর্থাৎ বিভিন্নভাবে লানত করে বা বদ দোয়া করে। আবার নারীরা বেশিরভাগ সময় গীবত, চুগলখরি বা একজনের কথা আর একজনকে লাগালাগি এবং হিংসা বিদ্বেষ ইত্যাদি।
তাই নারী পাঠকদেরকে বলবো যে আপনার ভিতরে যদি এই খারাপ অভ্যাসগুলো থেকে থাকে অর্থাৎ স্বামীর অকৃতজ্ঞতা, একটুতেই বদদোয়া দেওয়া, গীবত এবং চুগলখুরি ইত্যাদি, তাহলে অচিরেই ফিরে আসুন এবং বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন ইনশাআল্লাহ মুক্তি পাবেন। জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর রাসূল বেশি বেশি দান খয়রাত করতে বলেছেন তাই বেশি বেশি দান খয়রাত করুন এবং নফল আমল গুলো করুন।
Masha Allah fantastic!