জ্বর কেন হয়শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে এটি বাবা-মা এবং বাচ্চার অভিভাবকদের জানা
উচিত। প্রিয় পাঠক, আমাশয় এর পিছনে সবচেয়ে বেশি দায় পানির। অবুঝ শিশুর যত্নে সজাগ
থাকুন নয়লে ছোট থেকে বড় রোগ হয়ে যেতে পারে।
এক্ষেত্রে, ছোট বাচ্চাদের ডাবের পানি, ফলের রস ও পানি জাতীয় নানা তরল খাবার
খাওয়াতে হবে। পানির চাহিদা পূরণে আপনি খাবার স্যালাইন ও খাওয়াতে পারবেন। আমাশয়
শিশুর খাবার নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করছি।
পোস্ট সূচীপত্রঃ শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে
শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে
শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে ব্যাপারটি এখানে স্পষ্ট করে লিখছি। আমাশয়
হচ্ছে ইন্টেস্টাইন বা নাড়ি-ভূঁড়ির ইনফেকশন বা সংক্রমন। ছোট বাচ্চা বা শিশুরা
হামাগুড়ি দেওয়ার সময় বা একটু বড় হলে তাদের হাঁটার সময় মাটিতে পড়ে থাকা বিভিন্ন
অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে নেয়। এবং যার ফলে জীবাণু অন্ত্র বা নাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে এবং
সেখান থেকে আমাশয় হয়, এই একটা আমাশয় হওয়ার প্রধান কারণ।
আরো পড়ুনঃ শীতে বাচ্চাদের যত্ন - শীতে বাচ্চাদের স্বাস্থ্য
তবে আমাশয় হলে জীবন নাশের মত কোনো সমস্যা হয় না তবে দীর্ঘ মেয়াদী হলে জীবন বিপন্ন
হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আমাশয় হলে শারীরিক একাধিক সমস্যা হতে পারে, যেমন পেট ব্যথা,
পেট ফাঁপা ও ফুলে যাওয়া, জ্বর ও সর্দি হওয়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, রক্তমাখা
পায়খানা হওয়া, ডায়রিয়া হওয়া এবং বমি বমি ভাব হওয়া সহ ইত্যাদি ঘটে থাকে।
শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে নিম্নে লিস্টে লিখছি।
১. পানিঃ শিশুটিকে বেশি বেশি পানি খাওয়ান।
২. তরল খাবারঃ যেকোনো তরল খাবার
খাওয়াতে পারেন।
৩. দইঃ দই এক ধরনের প্রোবায়োটিক, তবে সেটি টক দই হতে হবে।
৪.
পাতলা খিঁচুড়িঃ পাতলা করে খিঁচড়ি বা আলো চালের ভাত খাওয়ালে বাচ্চাটি আরাম
পাবে।
৫. কলার স্মুদিঃ কলা দিয়ে স্মুদি বা গাঢ় জুস বানিয়ে খাওয়ালে শিশু
স্বাচ্ছন্দ ও হ্যাপিনেস অনুভব করবে।
৬. সেদ্ধ আলুঃ আলু সেদ্ধ করে খাওয়ানো
যেতে পারে।
৭. রুটিঃ রুটি নরম করে বানিয়ে খাওয়াতে পারেন, এতে শিশুর পেট ভালো
অনুভূতি অনুভব করবে।
৮. ভাতঃ ভাত নরম করে সেদ্ধ করে খাওয়ালে শিশুকে ভালো
লাগবে।
৯. সেদ্ধ সবজিঃ বিভিন্ন জাতের সবজি শিশুর আমাশয়ের জন্য
স্বাস্থ্যকর।
১০. ফলের জুসঃ এটি তৈরী করে খাওয়ালে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়াবে ইত্যাদি।
আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবেনা
আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবেনা এখানে তা লিখছি। আমাশয় হলে বিভিন্ন খাবার
খাওয়া যাবে না, যেগুলো নিম্নে পেশ করছি।
- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার
- ভাজা খাবার
- মসলাযুক্ত খাবার
- হজমে অসুবিধা সৃষ্টিকারী খাবার
- মন্ত্রের সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলে এমন খাবার
তবে শিশুদের আদর্শ খাবার হচ্ছে আমাশয় এর সময় হালকা, সহজবোধ্য ও হজমযোগ্য খাবার।
আমাশয় হলে কি দই খাওয়া যায়
আমাশয় হলে কি দই খাওয়া যায় এ প্রশ্নের আলোকে উত্তর হলো দই খাওয়া যাবে এতে কোনো
সন্দেহ নেই। কারণ, দই হচ্ছে প্রোবায়োটিক বা জীবন ধারণকারী ক্ষমতা সমতা
সম্পন্ন সাপ্লিমেন্ট বা এনার্জি সহযোগী। এটি অন্ত্র বা নাড়ি-ভূঁড়ির জন্য
অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার।
তবে, অতিরিক্ত টপ বা অমূল্য জাতীয় দই খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত কারণ
এতে গ্যাস্ট্রিক জাতীয় সমস্যা হতে পারে। হালকা মিষ্টি অথবা ঘোল দই
আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন যা তার ইন্টেস্টাইনের (অন্ত্র) জন্য ব্যাকটেরিয়া
নাশক হিসেবে কাজ করবে।
আমাশয় হলে কি ডিম খাওয়া যাবে
আমাশয় হলে কি ডিম খাওয়া যাবে এটির উত্তর হলো ডিম খাওয়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা
উচিত। কারণ এতে রয়েছে চমৎকার প্রোটিন। ডিমের সাদা অংশ যেহেতু সহজে হজম
হয় তাই তা খাওয়া যাবে তবে তার কুসুমটা না খাওয়াই ভালো কারণ এটি অনেকের
ক্ষেত্রে তাদের পেটের জন্য সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে।
সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশ আপনার শিশুকে খাওয়ালে কোন সমস্যা আসবে না, তবে
দেখতে হবে যে এটি খাওয়ার পর কি ইফেক্ট বা প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। কারণ
ডিমের সাদা অংশ ভালো হলেও সবার পেটে তা সয় না, এইজন্য সহ্য হলে খাওয়াবেন আর না
হলে খাওয়াবেন না।
আমাশয় হলে কি আম খাওয়া যাবে
আমাশয় হলে কি আম খাওয়া যাবে এ জিজ্ঞাসার জবাব হলো আম ফল দেহের জন্য
সাধারণত ভালো, তা সত্ত্বেও এটি যখন আপনার শিশু বাচ্চার আমাশয় হবে তখন না
খাওয়ানোই উচিত।
যেহেতু আমের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফাইবার বা আঁশ এবং মিষ্টতা যা শিশুটির পেটের
সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই এই আমাশয়ের সময় আম খাওয়ানো থেকে এড়িয়ে চলা উচিত।
রক্ত আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত না
রক্ত আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত না এ কথাটির প্রতি উত্তরে আমরা বলব যেটা স্টাডি
করে পেয়েছি, আর তা হলো রক্ত আমাশয় হলে শরীর অত্যাধিক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং
ব্লাড বা রক্ত প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। তাই এই সময় আপনার শিশুকে
হালকা, সহজে হজমজাত খাবার এবং নিউট্রিশন বা পুষ্টিকর খাবার
খাওয়ান।
তবে, নিম্নের খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন।
- অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার।
- ভাজা-পোড়া খাবার।
- এবং চর্বিযুক্ত খাবার।
আমাশয় হলে কি কলা খাওয়া যায়
আমাশয় হলে কি কলা খাওয়া যায় এ কথার জবাব হল কলায় রয়েছে
পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য আরো পুষ্টিকর উপাদান
যেগুলো আপনার শিশুর শরীরের জন্য সুবিধা যোগান দিবে।
পাশাপাশি কলা সহজে হজম হয় এবং আপনার শিশুর অন্ত্র
বা নাড়ির কাজকর্মকে স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা
পালনকারী হবে। আর কলা খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুটি প্রয়োজনীয় এনার্জিও
পাবে।
আমাশয় হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে না
আমাশয় হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে না এ প্রশ্নের আলোকে আমরা উত্তর প্রদান করতে
পারি যে এই সময় কতিপয় ফল খাওয়া অনুচিত। যে ফলগুলো খাওয়া যাবেনা তা হল
যথাক্রমে,
- সাইট্রাস বা বেশি ফাইবারযুক্ত ফল কারণ এতে গ্যাসের সমস্যা তৈরী করবে।
- লেবু খাওয়া যাবে না।
- আনারস খাওয়া যাবে না।
তবে কলা ও আপেল খাওয়াতে পারবেন শিশুকে কারণ এগুলো ইন্টেস্টাইনের জন্য সহজে হজম
হয়ে থাকে।
আমাশয় হলে কি দুধ খাওয়া যাবে
আমাশয় হলে কি দুধ খাওয়া যাবে এটি বলছি। দুধে যেহেতু প্রোটিন এবং অত্যাধিক
ক্যালসিয়াম রয়েছে বিধায় এই সময়ে দুধ না খাওয়ানোই ভালো, কারণ এতে ইহা হজমে
সমস্যা বা অসুবিধা তৈরি করতে পারে। কতেক শিশুর দুধ খেলে সমস্যা না হলেও এবং
সহজে হজম করতে পারলেও অন্য বেশ কিছু শিশুর দুধ খাওয়াতে পেটের সমস্যা বাড়িয়ে
তুলতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কলার খোসার রহস্যে ঘেরা ১৫টি উপকারিতা পড়ুন
এজন্য যেই শিশুদের দুধ খেলে পেটের সমস্যা হয় আমার সহায় হলে দুধ
খাওয়ানো এড়িয়ে চলা জরুরী মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দুধের পরিবর্তে
আপনি আপনার প্রিয় বাচ্চাটিকে দুই বা ঘোল খাওয়াতে পারেন যা তার পেটের হজমের জন্য
সহায়ক হবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে এ সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো লেখার
চেষ্টা করেছি. প্রিয় পাঠক আপনি যদি উক্ত আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে
নিশ্চয়ই আপনার শিশুর জন্য আমাশয় হলে কি খাওয়া যাবে আর কি খাওয়া যাবেনা
বিষয়গুলো মোটামোটি আইডিয়া পেয়েছেন। আরো এ রকম নিত্য নতুন ব্লগ পেতে আব্দুন আইটি
ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ FAQ
আমাশয় হলে কলা খাওয়া যাবে কি?
হ্যাঁ, আমাশয় হলে কলা খাওয়া যাবে কারণ এটি সহজে হজমযোগ্য ও পুষ্টি সম্পন্ন খাবার।
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া যায়?
বাচ্চাদের আমাশয় হলে খিঁচুড়ি, কলা, সিদ্ধ আলু এবং মিষ্টি দই খাওয়াতে
পারেন।
আমাশয় রোগের লক্ষণ কি কি?
আমাশয় রোগের লক্ষণ হল যথাক্রমে জ্বর, পেটে
ব্যথা, ডায়রিয়া, ক্লান্তি লাগা এবং মলদ্বার দিয়ে রক্ত বের
হওয়া।
আমাশয় কত দিন থাকে?
আমাশয় সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, তবে এটি রোগীর
বিভিন্ন অবস্থা ও ট্রিটমেন্টের ওপরও নির্ভর করতে পারে।
আমাশয় হলে কি ওটস খাওয়া যাবে?
আমাশয় হলে সহজে হজম যোগ্য এবং হালকা ওটস খেতে পারেন বা আপনার রোগীকে খাওয়াতে
পারেন।
আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url