শিশুর নানা অসুখে শিশুকে যে ফল খাওয়াতে হবে

শিশুদের আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবেবাচ্চাদের কখন ফল খাওয়া উচিত বা কোন সময়ে কোন ফল খাওয়াবেন বা শিশুর কোন অসুখে কোন ফল খাওয়াবেন আজকের আর্টিকেলে এমন প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত পরিসরে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। ফল এর ইংরেজী হলো Fruit, আর আরবী হলো ثمر (ছামারুন)। 

শিশুর-নানা-অসুখে শিশুকে-যে-ফল-খাওয়াতে-হবে

প্রিয় পাঠক, ফল যদি অর্গানিক বা প্রাকৃতিক বা বিষসার মুক্ত করে উৎপাদন বা চাষ করা যায় তাহলে এই ফলেই আপনার শিশুর জন্য হতে পারে যেমন খাবার হিসাবে মজার তেমনি উপকারী রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক রুপেও কার্যকরী। নিম্নে এহেন কোন রোগে কি ফল খেতে হবে তা পেশ করছি, ইনশাআল্লাহ!

পেজ সূচীপত্রঃ

শিশুর নানা অসুখে শিশুকে যে ফল খাওয়াতে হবে

বাচ্চাদের কখন ফল খাওয়া উচিত ব্যাপারটি ফুটিয়ে তুলছি। ছোট বাচ্চাদের তো নানাবিধ অসুখ লেগেই থাকে। মা বাবা তাড়াতাড়ি ওষুধপত্র খাওয়াতে শুরু করেন। কোন কোন সময় তেতো ওষুধও খাওয়াতে হয় যা সাধারণত বাচ্চারা খেতে চায় না। অনেক সময় বাচ্চাদের ভোলাবার জন্য বাজারের মিষ্টি কিনে খাওয়ানো হয়। তো এক্ষেত্রে আপনি মিষ্টির বদলে ফল খাওয়ান যা বাচ্চার জন্য অনেক ভালো। বাচ্চারা ফল খেতে ভালোবাসে। ভালোবাসা এইজন্য যে অনেক ফলেই টক ও মিষ্টি দুই স্বাদই একসঙ্গে পাওয়া যায়। 

আরো পড়ুনঃ নানা রকম শারীরিক গন্ডগোলে ফলের ব্যবহার

তাজা এবং শুকনো ফল বাচ্চাদের নানান অসুখে অমৃতের মত কাজ করে অনেক সময়। তাজা ফলের মধ্যে কমলা লেবু, আঙ্গুর, কলা, আপেল, পেয়ারা, মোসাম্বি, ডালিম ও শুকনো ফোনের মধ্যে বাদাম খাওয়ালে বাচ্চাদের স্বাস্থ্যেরও অনেক উন্নতি হবে এবং জীবনী শক্তি বাড়বে। 

দুর্বল শিশুর জন্য ফল

যেসব শিশুর মায়েদের দুধ পাইনা তারা বেশিরভাগই দুর্বল শাস্তির হয় এবং তাদের শরীরের ওজন সাধারণত কম হয়। এই শিশুদের নিয়মিত পাকা কমলালেবুর রস খাওয়াল শরীর সুস্থ হতে থাকবে এবং নানাবিধ অসুখের হাত থেকে বেঁচে যাবে। 

পুষ্টির অভাবে যেসব বাচ্চারা দুর্বল ও রোগা সেইসব বাচ্চাদের প্রতিদিন নিয়ম করে আধখানা থেকে একটা যেরকম খেতে পারবে পাকা কলা খাওয়ালে স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। অবশ্য লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে পেট খারাপ না হয় বা পায়খানা এঁটে না যায়। 

শিশুদের ওজন বাড়াতে ফল

গরু বা ছাগলের টাটকা দুধ (ঠান্ডা) দুই ভাগ, সামান্য গরম পানি একভাগ এবং কমলালেবুর রস একভাগ মিশিয়ে খাওয়ালে নানা রকম অসুখের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ঠিক এরকম ভাবে কমলালেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে সমান উপকার পাওয়া যাবে। আস্তে আস্তে বাচ্চার ওজন বাড়বে। 

কমলালেবু চিকিৎসা 

আমাদের দেশে ৯৯% বাচ্চারা শুধু মায়ের দুধ খেয়েই বড় হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় শতকরা 80 জন মায়ের বুকে প্রয়োজনমতো দূর থাকে না। ফলে বহু শিশুরই স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। শিশু বয়স থেকে স্বাস্থ্য খারাপ হলে যে কোন রোগই হতে পারে। 

কমলালেবু তো পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন থাকায় নিয়মিত শিশুর মাকে ও শিশুকে কমলালেবুর রস খাওয়াতে পারলে মায়ের দুধ বাড়বে এবং শিশুর ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। শীতকালে তো শিশুদের নিয়মিত কমলালেবুর রস বিশেষ করে খাওয়ানো দরকার। এ রস খেলে শিশু সর্দি কাশির আক্রমণ থেকেও বাঁচবে। 

আঙ্গুরের রস দিয়ে শিশুর জন্য ঔষধ 

প্রতিদিন এক চামচ করে আঙ্গুরের রস খাওয়াতে পারলে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে এক চা চামচ থেকে শুরু করে অপেক্ষাকৃত বড় শিশুদের ক্ষেত্রে এক টেবিল চামচ পর্যন্ত এই ভাবে খাওয়ালে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। পেট পরিষ্কার থাকলে অন্য অসুখ ও কম হবে। এছাড়া সকালে বিকালে এক চামচ করে আঙ্গুরের রস খাওয়ালে শিশুদের অকারনে কান্না, ঘ্যানঘ্যানানি ভাব ও কমবে, দাঁত উঠার সময়ও উপকার পাওয়া যাবে। শরীরের শুকনো ভাব ও শুকনো কাশিও কমবে ‌

আঙ্গুরের-রস-দিয়ে-শিশুর-জন্য-ঔষধ

যেসব শিশুদের তড়কা বা ফিট মতো হতে থাকে, তাদের দিনে তিনবার করে আঙ্গুরের রস খাওয়ালে খুব তাড়াতাড়ি এই অসুখের হাত থেকে মুক্তি পাবেন। সম্ভব হলে আঙ্গুরের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়াবেন। এতে শিশুর মধ্যে হাসিখুশির ভাবও আসবে এবং স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হবে। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আঙ্গুরের রস বেশি খাওয়ার জন্য বাচ্চার পেট খারাপ না হয়ে যায়। 

স্কার্ভি ও চর্মরোগে (ভিটামিনের অভাবে) 

একদিন অন্তর যদি পাতিলেবুর রস, মধু আর কডলিভার অয়েল ঠিকমতো খাওয়ানো যায়, যতটা পরিমাণে খেলে শিশুর সহ্য হবে ততটা, তাহলে এটি রোগে খুব উপকার দেবে। 

শিশুদের পেটের গন্ডগোল 

শিশুদের পেটে গন্ডগোল লেগেই থাকে। যারা শিশুদের নিয়মিত ফল খাওয়ান তারা পেটের অসুখ হলে শিশুদের সব ফল খেতে দেবেন না। তবে আপিল খাওয়ালে পেটের কোন গন্ডগোল হবে না। 

আরো পড়ুনঃ সুস্থ থাকতে পাতিলেবুর ব্যবহার ও উপকার এর জুড়ি মেলা ভার

সেদ্ধ করে আপেল খাওয়ালে পেটের অসুখ কমবে। আর সে সময় শিশুকে কমলা লেবুর রস খেতে দেবেন না, বিশেষ করে টপ কমলা লেবুতো নয়ই।

লেখকের শেষ মন্তব্য 

বাচ্চাদের কখন ফল খাওয়া উচিত বা কি অসুখে কোন ফল খাবে তা নিয়ে আইডিয়া দিতে সচেষ্ট হয়েছি উক্ত ব্লগটিতে। সম্মানিত পাঠক, আপনার শিশু বা বাচ্চা ছেলে মেয়ে নিশ্চয় আপনার কাছে খুব আদরের ও ভালোবাসার তাই না? অবশ্যই তাই, সুতরাং জ্ঞাতব্য যে, ছোট বাচ্চাদের সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম। 

এই জন্য তাদের রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে নিত্য নৈমিত্তিক সাবধানতা অবলম্বনে নানা মৌসুমী ফল খাওয়ান। তবে, আজকের যামানায় ভেজালে পৃথিবীটা ছেয়ে গেছে, বিধায় যে ফলটি খাওয়াবেন তা যদি বাজারের হয় তাহলে ফলগুলোকে কম্পক্ষে ৪৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং তারপরে শিশুকে খাওয়াবেন। 

তবেই, ইনশাআল্লাহ আশা করা যায় ফলে যে ফর্মালিন বা দূষিত পদার্থ বা বিষ এটি পরিষ্কার হয়ে যাবে। আর বিশেষকরে শিশুদের ভারী ফলে হজমে সমস্যা হতে পারে, এই জন্য প্রথমে ধীরে ধীরে ফল খাওয়ার অভ্যাস করে দেখতে হবে কোন ফল সে ভালোভাবে ডাইজেস্ট বা হজম করতে পারছে বা তার জন্য সহনশীল হচ্ছে। 

সার্বিক দিকগুলো বিচার বিশ্লেষণ করে ফল খাওয়ান। আর প্রয়োজনে একজন দক্ষ পুষ্টিবিদ বা সুচিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক পদক্ষেপ নিন! আরো এমন ব্লগ পেতে সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url