২টি ভাবসম্প্রসারণঃ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি এ প্রবাদটি ঘিরে

ভাবসম্প্রসারণঃ ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখপরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি এ প্রবাদটির ভাবসম্প্রসারণ জানার জন্য এখানে এসেছেন তাই নয় কি? আসলে পরিশ্রম ভাগ্য গড়তে প্রসূতি বা মা মূল হয়ে থাকে। প্রসূতি শব্দের শাব্দিক অর্থ হলোই মা বা মূল। প্রিয় পাঠক, তাই জীবনে বড় কিছু হতে হলে পরিশ্রম ছাড়া বিকল্প পথ হতে পারেনা। 

পরিশ্রম-সৌভাগ্যের-প্রসূতি

তাই শর্টকোটে সফল বা সাফল্যের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে আজই পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের স্বপ্নকে স্পর্শ করতে চাওয়া একজন বুদ্ধিমানের কাজ। নিচে পরিশ্রম সৌভাগ্যের মা ব্যাপারটির ভাবসম্প্রসারণ লিখছি। 

পেজ সূচীপত্রঃ

১ম ভাবসম্প্রসারণঃ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি এ ব্যাপারে ১ম ভাবসম্প্রসারণটি এখানে লিপিবদ্ধ করছি।

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি একটি চিরন্তন সত্য যে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই উক্তি দ্বারা বুঝানো হয় যে সৌভাগ্য বা সাফল্য অযথা আপনি পাবেন না। বরং এটিপিতে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে অর্জন করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, যে ব্যক্তি শ্রম ও পরিশ্রম করতে ভয় পায় সে জীবনের প্রকৃত সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। 

আরো পড়ুনঃ শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড সম্পর্কে ৫টি ভাবসম্প্রসারণ

পরিশ্রম মানব জীবনের উন্নতির মূল ভিত্তি। ইতিহাসের পাতায় আমরা দেখতে পাই যে, পৃথিবীর সব মহান মানুষ তাদের কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে নিজেদের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। যেমন বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিশন এক হাজারেরও বেশি বার ব্যর্থ হওয়ার পর বৈদ্যুতিক বাল আবিষ্কার করেছিলেন। তার এই অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং বিশেষ করে পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের কারণেই তিনি আজও  এ ধরায় স্মরণীয় হয়ে আছেন।

অলসতা মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। যে ব্যক্তি পরিশ্রম এড়িয়ে যায় তার জীবনে হতাশা ও দুঃখ বাসা বাধে। অন্যদিকে পরিশ্রমী মানুষ কঠিন পরিস্থিতিতেও আত্মবিশ্বাস ধরে রাখে এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে তা অতিক্রম করে। উদাহরণস্বরূপ, একজন কৃষক দিনের পর দিন পরিশ্রম করে জমিতে ফসল ফলান। তার এই প্রচেষ্টার ফলেই আমরা খাবার বা খাদ্য পেয়ে থাকি। 

আমাদের জীবনে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য বিষয়। এটি কেবলমাত্র সৌভাগ্যের দারুন মুক্ত করে না বরং আমাদের চরিত্র গঠনে ও সমাজে সম্মান অর্জনে সহায়ক হয়। কঠোর পরিশ্রমি মানুষ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই সাফল্যের ছাপ রাখে এবং অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা উৎস হয়ে যায়। 

পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনি সৌভাগ্যের পথ প্রশস্ত করতে পারেন। এটি জীবনের একটি অনিবার্য সত্য যা প্রতিটি মানুষের উপলব্ধি করা উচিত। তাই আমাদের উচিত নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে পরিশ্রম করে এগিয়ে যাওয়া। একমাত্র এভাবেই জীবনের আসল সৌভাগ্য লাভ করা সম্ভব। 

২য় ভাবসম্প্রসারণঃ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

এখানে আমরা পরিশ্রম সোভাগ্যের প্রসূতি সম্পর্কে ২য় ভাবসম্প্রসারণটি লিখছি। 

মূলভাবঃ সৌভাগ্য কেবল কল্পনা বা ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল নয়, বরং এটি অর্জিত হয় পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং ধৈর্যের মাধ্যমে। যে ব্যক্তি নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, তারই জীবনের সাফল্য ধরা দেয়। 

সম্প্রসারিত ভাবঃ জীবনে বড় কিছু অর্জনের জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য একটি টপিক। প্রকৃতপক্ষে, সৌভাগ্য তাদের পক্ষেই থাকে যারা তা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। একদিন পরিশ্রমী মানুষ নিজের মেধা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে যে কোন চ্যালেঞ্জ কে জয় করতে পারে। ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টান্ত রয়েছে যে পরিশ্রমী ব্যক্তিরা কখনোই সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয় নাই। যেমন আপেল গাছ থেকে ফল পড়ার ঘটনাকে সাধারণ মানুষ উপেক্ষা করলেও বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন এই ঘটনা থেকে অভিকর্ষজ তত্ত্ব আবিষ্কার করেন। এই অর্জন তার অধ্যবসয়ের ফসল।

অলসতা মানুষের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। অলসোয়া প্রায়শই নিজের ব্যর্থতার জন্য ভাগ্যকে দায়ী করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, পরিশ্রমী জীবনে উন্নতি আনয়নের জন্য মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। একজন শিক্ষার্থী যদি নিয়মিত অধ্যাবসায় করে,  তবে সে পরীক্ষায় সফল হবেই এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ, কথায় আছে মেহনত কিসি কো ধোঁকা নেহি দিতি; মানে পরিশ্রম কাউকে ফাঁকি দেয় না। যেমন একজন কারিগর দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করে তার সৃষ্টিকে নিখুঁতভাবে ভোট দেয়। তাই বলা হয় যে পুলিশ মানুষেরাই জীবনের সৌন্দর্য অনুধাবন করতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ ভাবসম্প্রসারণ: স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন

মানুষের জীবনে সাফল্য ও সৌভাগ্যের একটি হল এই পরিশ্রম। আপনিও যদি সফলতা বা সাফল্যের চাবিকাঠি পেতে চান তাহলে আত্মবিশ্বাসের সাথে পরিশ্রমের ব্রত হোন। কারণ, এটি কেবল সফলতার চাবিকাঠি নয়, বরং আত্মবিশ্বাস এবং সমাজে মর্যাদা অর্জনের মাধ্যম ও বটে। তাই, কঠোর পরিশ্রম করলে আপনার আত্মা যেমন বলে শাণিত হবে, পাশাপাশি মনোযোগ বৃদ্ধি করবে, আর এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 

লেখকের শেষ কথা

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি সম্পর্কে দুইটি ভাব সম্প্রসারণ লেখার চেষ্টা করেছি উক্ত আর্টিকেলটিতে।প্রিয় পাঠক, মূলতঃ পরিশ্রম ছাড়া কখনো কেউ সৌভাগ্যের আশা করতে পারে না। তাই ভাগ্যকে চেঞ্জ করতে হলে পরিশ্রম নামক বিষয়টির সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে অলসতাকে ত্যাগ করে জয়কে অর্জন করুন। 

আর এই জন্যই, আমাদের উচিত প্রতিটি কাজ নিষ্ঠা ও শ্রম দিয়ে করে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করা।তাহলেই, এ কথাটি সার্থক হবে যে পরিশ্রমী মূলত জীবনে সৌভাগ্যের প্রকৃত উৎস হয়ে থাকে। আরো ভালো ভালো ব্লগ পেতে আব্দুন নূর আইটির সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url